চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন তার সীমা মেনে চলে। কোনোভাবেই যেন চীনের স্বার্থের গণ্ডিতে পা না দেয়।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেইজিংয়ে দুই দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে এভাবেই হুঁশিয়ার করেন। খবর বিবিসির।
ওয়াং যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের সীমারেখা টেনে দেন। একে তিনি ‘লাল রেখা’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন এ লাল রেখায় পা না দেয়। অর্থাৎ চীনের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রকে তিনি বুঝিয়েছেন। যাতে এসবে যেন যুক্তরাষ্ট্র নাক না গলায়।
বৈঠকের শুরু থেকেই তীক্ষ্ণ ভাষায় কথা বলছিলেন। তার কথায় ছিল হুমকির সুর। তিনি প্রথমেই বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কী করা উচিত? আমাদের কি স্থিতিশীলতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া ঠিক হবে নাকি নিয়ন্ত্রণহীন খারাপ সম্পর্কে ফিরে আসা উচিত?
তিনি বলেন, চীন-মার্কিন সম্পর্ক স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো নেতিবাচক ইস্যুগুলো দিয়ে তা যাচাই করা হচ্ছে। উভয় দেশই সহযোগিতা বা সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে। এমনকি সরসরি সংঘাতের দিকেও ধাবিত হতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউএস-চীন সম্পর্কে নেতিবাচক বিষয়গুলো এখনো ক্রমবর্ধমান এবং তা বাড়ছে। সম্পর্কটি সব ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, চীনের বৈধ উন্নয়ন অধিকারগুলো অযৌক্তিকভাবে দমন করা হয়েছে এবং আমাদের মূল স্বার্থগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।।
ওয়াং এই চ্যালেঞ্জগুলো নির্দিষ্ট করেননি। তবে এর মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের অবস্থান, তাইওয়ানে সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন, তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা এবং মানবাধিকার ইস্যুসহ দুটি পরাশক্তির মধ্যে বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল পয়েন্ট রয়েছে।
চীন স্বশাসিত তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দাবি করে। চীন চায় তা বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। তবে দ্বীপটির বাসিন্দারা তাইওয়ানকে আলাদা রাষ্ট্র মনে করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের উসকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া টিকটকের বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপেও অসন্তুষ্ট চীন।
সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ঘিরেও চীন-মার্কিন বিভক্তি স্পষ্ট হয়। এর মধ্যেই এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে চীনে ব্লিঙ্কেন দ্বিতীয়বার সফরে এলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও বৈঠক নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে মতপার্থক্যের অবসানে অগ্রগতির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ওয়াং ই’র সঙ্গে বৈঠকের সূচনাতে ব্লিঙ্কেন বলেন, তিনি ‘খুব স্পষ্ট, খুব সরাসরি কথা বলবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টরা যেসব বিষয়ে সম্মত হয়েছেন সেসব বিষয় আমরা কিছুটা এগিয়ে নেব বলে আমি আশা করছি।’
মন্তব্য করুন