আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার একযোগে ২২ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে দামাল। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নিয়ে নির্মিত এ সিনেমা ক্রীড়াঙ্গনেও তুলেছে আলোচনার ঝড়।
সাধারণের মধ্যে দামাল নিয়ে যতটা আলোচনা, ঠিক ততটাই সমালোচনা স্বাধীন বাংলা ফুটবল সংশ্লিষ্টদের নিয়ে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইতিহাস তৈরি করা দলটির সংগঠক ও খেলোয়াড়রা। দল নিয়ে সিনেমা নির্মাণের বিষয়টি ইতিবাচক হলেও পর্দায় এর ইতিহাস বিকৃতি ঘটলে তা হবে দুঃখজনক, আর তেমন কিছু ঘটে থাকলে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে আদালতে যাব আমরা—জানিয়েছেন দল তৈরির অন্যতম রূপকারের একজন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
‘দামাল’ ছবিটি নির্মাণের আগে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কেউ আমার বা আমাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি; করেছে বলেও শুনিনি। সবচেয়ে বড় কথা—এ দলটি দেশের ক্রীড়াঙ্গনের গৌরবের অধ্যায়। দলটির সদস্য হিসেবে আমাদের সবার চাওয়া, ‘দামালের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ইতিহাস উঠে আসুক, যাতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারে নতুন প্রজন্ম’—কালবেলাকে বলছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য সাইদুর রহমান প্যাটেল।
তিনি এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্য সদস্যরা অচিরেই হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখবেন। রায়হান রাফি পরিচালিত এ সিনেমায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সঠিক ইতিহাস উঠে এসেছে কিনা, সেটিই পর্যবেক্ষণ করবেন সবাই মিলে। তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতির অধিকার কারও নেই। তেমনি অসত্য কিছু চিত্রায়িত হলে স্বাধীন বাংলা দল নিয়ে সঠিক ইতিহাস জানবে না আগামী প্রজন্ম। আর তেমন কিছু হয়ে থাকলে সবকিছু খতিয়ে দেখে আমরা প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেব। এ নিয়ে এরই মধ্যে আমাদের দলটির ম্যানেজার তানভীর মাযহার তান্নাসহ প্রায় সবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সিনেমাটি দেখে আমাদের করণীয় ঠিক করব, সেইসঙ্গে গণমাধ্যমকেও জানাব।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শঙ্কর হাজরাও জানালেন কারও সঙ্গে ছবি সংশ্লিষ্টরা যোগাযোগ করছে কিনা জানি না। তবে আমার সঙ্গে করেনি। ছবিটি সত্যনির্ভর গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সেটা করা উচিত ছিল মনে করলেও এর জন্য প্রতাপ শঙ্কর দায়ী করলেন দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের। তার দাবি, ‘গণমাধ্যম একেক সময় একেকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে দলটিকে তুলে ধরেছে। সেখানে কিছু বিকৃতি ছিল, কিছু অতিরঞ্জিত তথ্যও ছিল, যা দুঃখজনক।’
দামাল নির্মাণের পটভূমি নিয়ে যদিও সিনেমাটির পরিচালক রায়হান রাফি আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘এটা আমার স্বপ্নের প্রকল্প। এ সিনেমার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক দিন গবেষণার পর এ সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, দামালে এমন কিছু নেই, যা ইতিহাসকে বিকৃত করে।’