রায়হান রাসেল
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০৪:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাতার বিশ্বকাপে থাকছে ১০ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি

কাতার বিশ্বকাপে থাকছে ১০ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি

কাতার বিশ্বকাপে থাকছে প্রগতিশীল প্রযুক্তির ছোঁয়া। ফুটবল যজ্ঞ উপলক্ষে একটি ‘টেক হাব’ স্থাপন করেছে কাতার। এর দ্বারা বিশ্বকাপ উপভোগ করতে আসা ফুটবলপ্রেমীদের ওপর নজর রাখতে পারবেন আয়োজকরা। শুধু তাই নয়, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণও করতে পারবেন তারা। এমন অনেক প্রযুক্তির ব্যবহার হবে কাতার বিশ্বকাপে। দেখে নেওয়া যাক, কাতারের কোন কোন প্রযুক্তি মন্ত্রমুগ্ধ করবে সারা বিশ্বকে।

আল রিহলা, প্রযুক্তিদ্বারা সজ্জিত প্রথম ফুটবল

আরবি ‘আল রিহলা’ শব্দের অর্থ যাত্রা। নতুন রূপে যাত্রা শুরু করেছে বিশ্বকাপের বলটি। এটিতে জুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নতুন এক প্রযুক্তি। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর প্রযুক্তি অনুযায়ী ম্যাচ অফিসিয়াল বা রেফারির কাছে রিয়েল-টাইম ডেটা পাঠাবে বলটি। আর থ্রিডি অ্যানিমেশন ফুটবলের সংস্পর্শে আসা প্রতিটি ঘটনার সঠিক অবস্থান জানা যাবে। বলটিতে আরও আছে মোশন সেন্সর। এতে বলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে সহজ হবে।

উন্নত কুলিং প্রযুক্তির স্টেডিয়াম

কাতার বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচিত হওয়ার পর পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোতে সবচেয়ে আলোচিত হয় মরুর গরম নিয়ে। বিশেষ করে জুন-জুলাই মাসে তাপমাত্রা হয় প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অথচ ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাধারণত তাপমাত্রা থাকে ২০-এর নিচে। কিন্তু কাতার আয়োজক কমিটি ঘোষণা দিয়েছিল, ইউরোপীয় উপযোগী তাপমাত্রার স্টেডিয়াম নির্মাণ করবে তারা।

হয়েছেও তাই, ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত স্টেডিয়াম তৈরি করেছে কাতার। প্রায় ২০ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের স্থিতিশীল তাপমাত্রা নিশ্চিত করার জন্য ভেন্যুগুলোতে থাকছে উন্নত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। এমনকি বিদ্যুৎ খরচ হবে বিশ্বের অন্যান্য স্টেডিয়ামের তুলনায় ৪০ শতাংশেরও কম।

ওয়াইফাই ও স্মার্ট চার্জিং স্টেশন

সৌরবিদ্যুৎ চালিত এলপাম উইন্ড টারবাইন বাতাস এবং সূর্যশক্তিকে সমন্বয় করবে। এই যন্ত্রটির কাজ হচ্ছে সমর্থকদের ছায়া প্রদান করা এবং ইউএসবি চার্জিং ডক হিসেবে কাজ করা। এমনকি এটি তথ্য বহন করার জন্য স্পিকার, ওয়াইফাই, শীতলীকরণ, নজরদারি ক্যামেরা এবং লাইটের কাজ দেবে।

প্রতিবন্ধীদের জন্য খেলা উপভোগের ব্যবস্থা

হাতে পরিধানযোগ্য ফিলিক্স পাম, একটি সংবেদনশীল যোগাযোগের যন্ত্র। এটি হাতের তালুতে প্যাটার্নযুক্ত তথ্য প্রেরণের মাধ্যমে এক ধরনের স্পর্শের অনুভূতি তৈরি করে, যার সংক্ষপ্তি নাম হ্যাপটিক প্রতিক্রিয়া। এর দ্বারা প্রতিবন্ধীরা নিখুঁতভাবে খেলায় মগ্ন হতে পারবেন। ম্যাচে সংঘটিত ছোট ছোট ঘটনা দ্রুত বুঝতে পারবেন। এতে পুরো ম্যাচটি প্রতিবন্ধীরা সুস্থ মানুষের মতোই উপভোগ করতে পারবেন।

সম্পূর্ণ অপসারণযোগ্য স্টেডিয়াম

অপসারণযোগ্য স্টেডিয়াম তৈরি করেছে কাতার। বিশেষ করে স্টেডিয়াম-৯৭৪ ঠিক খেলনার মতো করেই পুনরায় খুলে ফেলা যাবে। শিপিং কনটেইনার এবং ইস্পাত ফ্রেম থেকে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটি কাতারের জন্য আইকনিক।

আধা-স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি

কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে বিপ্লব ঘটবে মাঠের খেলাতেও। এবার আধা স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ম্যাচগুলোতে। ফলে রেফারিদের জন্য এটি হবে সহায়ক টুল। কেননা এটি টুর্নামেন্টের সময় সঠিকভাবে এবং অনেক কম সময়ের মধ্যে অফসাইড সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

প্রযুক্তিযুক্ত বল আল রিহলার ভেতরের সেন্সর ছাড়াও স্টেডিয়ামের চারপাশে ১২টি ট্র্যাকিং ক্যামেরা থাকবে। অফসাইড অবস্থান করা ফুটবলার বলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ামাত্রই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিকে অফসাইড সতর্কবার্তা প্রদান করবে। তাই অফসাইড হয়েছে কিনা, তা সহজে বোঝা যাবে।

পরিধানযোগ্য ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি

বিশ্বকাপ চলাকালীন চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি এড়াতে প্রস্তুত থাকবে পরিধানযোগ্য বেশি কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সিরিজ। স্নাগ-ফিটিং শার্টের কাপড়ে সরাসরি কম বিদ্যুতের সেন্সর মুদ্রণের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে শার্ট পরিধানকারীর হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হাইড্রেশন মাপা যাবে। এই শার্টগুলোতে ব্লুটুথেরও ব্যবস্থা থাকবে, যা সরাসরি বেস স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।

দেশ ঘুরে দেখার অ্যাপ্লিকেশন

বিশ্বকাপের খেলা দেখতে আসা পর্যটকের জন্য থাকছে নাভবাডি অ্যাপ। এটি কাতারে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য প্রদান করবে। স্টেডিয়ামগুলোর অবস্থানসহ হাসপাতাল, রেস্তোরাঁ, যানবাহন ইত্যাদির খোঁজ পাওয়াও যাবে অ্যাপে। এই অ্যাপের আওতায় থাকছে প্রতিটি ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য বৈদ্যুতিক বাস চলাচলের সময়সূচি।

সহজে ব্যবহারযোগ্য পূর্ণাঙ্গ স্বতন্ত্র ওয়েবসাইট

কাতার বিশ্বকাপে তৈরি করা হয়েছে একটি স্বতন্ত্র ওয়েবসাইট। এটিতে টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল, যাতায়াত, দর্শনীয় স্থান সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই প্ল্যাটফর্মটিতে।

স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে খাবার অর্ডার

ম্যাচ চলাকালীন গ্যালারিতে বসেই খাবার অর্ডার করতে পারবেন দর্শক। এএসঅ্যাপ নামের অ্যাপটি খাবার সরবরাহ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে। তাই টানটান উত্তেজনাকর ম্যাচ রেখে খাবারের জন্য আসন ছাড়ার প্রয়োজন পড়বে না কাউকেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রবাসীদের রেমিট্যান্স উন্নয়নের অন্যতম মূল চালিকা শক্তি : দীপু মনি

প্রচণ্ড তাপদাহে অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যা করবেন

মেঘনায় জাটকা ধরায় ২০ জেলে আটক

হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক / বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন

মদ বিক্রেতার হামলায় আহত হয়ে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর

যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক রিমান্ডে 

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অভিবাসী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৪

সাভারে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩

বিএনপি-জামায়াত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে : লিটন

শিল্প এবং সংস্কৃতির উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে : তথ্যপ্রতিমন্ত্রী 

১০

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গলা কেটে হত্যা

১১

বিরিশিরিতে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে মোড়ানো সাদা মাটির পাহাড়

১২

জামানত বৃদ্ধি উপজেলা নির্বাচনকে অর্থহীন করে তুলবে : গণতন্ত্র মঞ্চ

১৩

২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের ওপর হামলা / ডিএমপির অনুসন্ধান কমিটি গঠন 

১৪

জবিতে রেজিস্ট্রার নিয়োগকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি 

১৫

অচিরেই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বাজবে : সালাম

১৬

হঠাৎ সবুজ দুবাইয়ের আকাশ, বিরল দৃশ্য দেখল মরুশহর

১৭

ফের বাড়ল সোনার দাম, রেকর্ড ভাঙল অতীতের

১৮

ময়মনসিংহে চাষ হচ্ছে ১৫০ কেজি ওজনের পাঙ্গাস

১৯

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা

২০
*/ ?>
X