গোলের খেলা ফুটবল। গোলই এখানে শেষ কথা। গোলদাতাই থাকে সবার চোখের মণি হয়ে। তবে গোল না করেও একজন গোলকিপার হতে পারেন ম্যাচের নায়ক। আবার একটি ভুলে হয়ে উঠতে পারেন খলনায়ক। আর যদি সেটা হয় বিশ্বকাপের মঞ্চে, তা হলে তো কথাই নেই। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন কয়েকজন গোলকিপার। তেমন কয়েকজনকে নিয়ে কালবেলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
ম্যাচের পর ম্যাচ দলকে বাঁচিয়ে এবারের বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন ডোমিনিক লিভাকোভিচ, এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ও ইয়ামিন বুনো। তিনজনের দল যে সেমিফাইনালে খেলছে, এতে তাদের অবদান অনেক।
ডোমিনিক লিভাকোভিচ, ক্রোয়েশিয়া
এবারের বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচে প্রমাণ করেছেন তিনি কতটা দক্ষ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনাল দুই ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া জয় পেয়েছে টাইব্রেকে। দুই ম্যাচের নায়ক লিভাকোভিচ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জাপানের বিপক্ষে টাইব্রেকে তিনটি পেনাল্টি শট রুখে দেন তিনি। তার হাতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় জাপানের। এখানেই শেষ নয়, ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে উঠতে দেননি লিভাকোভিচ। ১২০ মিনিটের ম্যাচের পুরো সময়টাতেই ত্রাতা হয়ে ছিলেন তিনি। ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট এবং অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার পোস্টে সর্বমোট ১৩টি শট নেন নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা। এরপর টাইব্রেকে প্রতিহত করেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা রদ্রিগোর শট। আর এই টাইব্রেকে হেরে হেক্সা মিশন থেকে ছিটকে যায় ব্রাজিল।
আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
সেমিফাইনালে ডোমিনিক লিভাকোভিচের মূল প্রতিন্দ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছেন আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। ফ্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত এক সেভ করেন তিনি। আর কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে টাইব্রেকে হারায় আর্জেন্টিনা। সেখানেও নায়ক ছিলেন তিনি। ডাচদের প্রথম দুই পেনাল্টি শট আটকে বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো।
কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় চমক মরক্কো। নিজেদের ইতিহাসে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ সাফল্য এটি। শুধু তাই নয়, আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে সেমিফাইনালে উঠেছে তারা। দলের এই ধারাবাহিকতার পেছনে অন্যতম কারণ ইয়াসিন বুনো। কাতার বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত মাত্র একটি গোল হজম করেছেন তিনি। তাও সেটি সতীর্থের আত্মঘাতী গোল। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকে স্পেনকে হারায় মরক্কো। সেখানে স্পেনের তিনটি শট আটকে দেন বুনো। কোয়ার্টার ফাইনালেও পর্তুগালের বিপক্ষে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন ইয়াসিন বুনো। কাতার বিশ্বকাপে যেমন ছাপ রেখেছেন লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা। ঠিক তেমনই গোলপোস্টের নিচে চুপিসারে নিজের সেরাটা দিচ্ছেন লিভাকোভিচ, মার্টিনেজ, বুনোরা। তারা বিশ্বকাপের নীরব নায়ক।