আর একটি জয়, এতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে উঠবে বাংলাদেশ দল। কিন্তু অদ্ভুত এক মিশ্র অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঠের নেতৃত্বে বেশ সক্রিয়। সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে অসাধারণ। বিশেষ করে ফিল্ডিং সাজানো এবং বোলিং পরিবর্তন নজরে এসেছে অনেকের।
উদ্বেগের কারণ শান্তর ব্যাটিং ফর্ম। চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিন ইনিংসে তার রান হচ্ছে ৭, ১৪ এবং ১। টি-টোয়েন্টি সর্বশেষ ১৬ ইনিংসে তার গড় ১৩.৪৩, নেই কোনো অর্ধশতক। তিন ম্যাচেই তার আউট হওয়ার ধরন ছিল দৃষ্টিকটু।
ব্যাটিং খারাপ হলেও তার মাঠে এবং মাঠের বাইরের সিদ্ধান্তগুলো কাজে আসছে তার। সতীর্থদের সাহায্য করতে নিজের পছন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা ছেড়ে দিতে মোটেও কার্পণ্য করেননি তিনি।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যর্থ হন সৌম্য সরকার। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে তার পরিবর্তে মিডল অর্ডার ব্যাটার জাকের আলী অনিককে নেওয়া হয় একাদশে। ওপেনার সৌম্যর জায়গায় কাউকে না কাউকে ওপেনিংয়ে পাঠাতে হতো।
তিন নম্বরে খেলতে চান লিটন দাস। লিটনকে তার পছন্দের জায়গায় রেখে নিজেই নামেন ওপেনিংয়ে। শান্তর ব্যাটিং নিয়ে অসন্তুষ্ট ভক্তরা। একই সঙ্গে সন্দিহানও। নতুন পজিশনে এখনো নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি বাংলাদেশ দলপতি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ইনিংসের শুরুতেই তার শটটি তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
বিশ্বকাপে নাজমুল হোসেন শান্ত বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক নন, যিনি বাজে পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আট ইনিংসে হাবিবুল বাশার সুমনের গড় রান ছিল ১৩.১২। যদিও সেবার সুপার এইটে খেলেছিল বাংলাদেশ।
আর ২০১৯ সালে ৩৬১ রান দিয়ে মাত্র ১ উইকেট শিকার করেছিলেন মাশরাফী বিন মুর্তজা, সেবার দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা।
এর আগে বিশ্বকাপে অধিনায়কের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাই নাজমুল হোসেন শান্তসহ রানের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম থাকা বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটারা যত দ্রুত রানে ফিরে আসবেন, তাদের জন্য এবং দলের জন্যও সবচেয়ে ভালো।
চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের ব্যাটিং বাদে, সবকিছুতেই দুর্দান্ত নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশেষ করে সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছপা হন না তিনি। তার মাঝে বাংলাদেশ হয়তো এমন একজন অধিনায়ককে খুঁজে পেয়েছে, যিনি অতীতের বোঝা ঝেড়ে ফেলে ভবিষ্যতে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত এবং তার মুখে হাসি দিয়েই।
মন্তব্য করুন