১৪ বছর অপেক্ষার পর আবাহনী-মোহামেডান ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক
১৪ বছর অপেক্ষার পর আবাহনী-মোহামেডান ফাইনাল

১৪ বছর পর মুখোমুখি হচ্ছে সমর্থকপুষ্ট দুই ক্লাব আবাহনী-মোহামেডান। আসরটির ফাইনালে এটি হতে যাচ্ছে দুই দলের একাদশ মোকাবিলা। আগের ১০ লড়াইয়ে ছয়বার জিতেছে মোহামেডান; আবাহনী জিতেছে দুই ম্যাচ। বাকি দুটি ফাইনালে শিরোপা ভাগ করে নিয়েছে দুই দল

শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপ ফাইনালে উঠেছে আবাহনী লিমিটেড। বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে মোহামেডান। ৩০ মে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দেশের দুই জনপ্রিয় ক্লাব।

ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ১৪ বছর পর মুখোমুখি হচ্ছে সমর্থকপুষ্ট দুই ক্লাব আবাহনী-মোহামেডান। আসরটির ফাইনালে এটি হতে যাচ্ছে দুই দলের একাদশ মোকাবিলা। আগের ১০ লড়াইয়ে ছয়বার জিতেছে মোহামেডান; আবাহনী জিতেছে দুই ম্যাচ। বাকি দুটি ফাইনালে শিরোপা ভাগ করে নিয়েছে দুই দল। ২০০৯ সালে সর্বশেষ মোকাবিলায় আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা উল্লাস করেছিল সাদা-কালো শিবির। দুই দলের পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকলেও ফেডারেশন কাপের সবচেয়ে সফল দল কিন্তু আবাহনী। ১২ আসরের চ্যাম্পিয়ন দলটি রানার্সআপ হয়েছে সাতবার। অন্যদিকে ১০ বার শিরোপা জেতা মোহামেডান রানার্সআপ হয়েছে চারবার।

কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য ছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। একের পর আক্রমণে গোলের সুযোগও সৃষ্টি করেছিলেন ২০১২-১৩ মৌসুমের ট্রেবল জয়ীরা। খেলার ধারার বিপরীতে প্রথম গোল পায় আবাহনী। এক গোলের লিড ধরে রেখে মাঝ বিরতিতে যায় আকাশি-হলুদ জার্সিধারীরা। বিরতির পর শেখ রাসেলের ম্যাচে ফেরার পথ বন্ধ করে দেন তরুণ উইঙ্গার ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। বিরতির পর দুটি গোলই করেন তিনি।

ম্যাচের অষ্টম মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের ক্রস প্রতিহত করতে এগিয়ে আসেন আবাহনী গোলরক্ষক সহিদুল আলম। তিনি বল ধরার আগেই টোকা দিয়ে বল কেড়ে নেওয়া এমফন উদো গোলমুখও খুলে নেন; কিন্তু ফাঁকা পোস্ট পেয়েও বল বাইরে মারেন এ নাইজেরিয়ান। ১২ মিনিটে এমফন উদো আবারও আবাহনী গোলমুখে হানা দেন। এ যাত্রায় গোলরক্ষক সহিদুল আলম আবাহনীকে রক্ষা করেন। ৩৪ মিনিটে ডানদিকে রহমত মিয়া ও দানিয়েল কলিন্দ্রেসকে কাটিয়ে মো. ইব্রাহিমের করা ক্রস গ্রিপে নিয়ে আবারও আবাহনীর ত্রাতা হন সহিদুল আলম। ৩৫ মিনিটে কলিন্দ্রেসের জোড়ালো ফ্রি-কিক পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। ৩৬ মিনিটে ইব্রাহিমের পাস ধরে আরেকবার গোলে শট নিয়েছিলেন এমফন উদো। এবারও ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা প্রতিহত করেন সহিদুল আলম। ৩৮ মিনিটে দানিয়েল কলিন্দ্রেসের গোলে লিড পায় আবাহনী। সেন্টারব্যাক রেজাউল করিম রেজার লম্বা করে বাড়ানো বল ধরে ডানদিক দিয়ে বক্সে প্রবেশ করা কলিন্দ্রেস বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলামকে পরাস্ত করেন (১-০)। কোস্টারিকার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা ফরোয়ার্ডের গায়ের সঙ্গে লেগে থাকলেও তাকে প্রতিহত করতে পারেননি শেখ রাসেল ডিফেন্ডার মনির আলম।

৫১ মিনিটে বাঁদিকে দুই ডিফেন্ডারের মন্থর গতির সুযোগে রাফায়েল আগুস্তো বল নিয়ে বেরিয়ে যান। বক্সে প্রবেশ করে এ ব্রাজিলিয়ানের স্কয়ারপাস থেকে ঠান্ডা মাথার শটে গোল করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (২-০)। ৭০ মিনিটে ডানদিক থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রস প্রতিহত করতে গিয়ে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম উদ্ভট যে ডাইভ দেন, তাতে বল নিয়ে নিজেও গোলপোস্টে প্রবেশ করেন (৩-০)!

‘এটি এমন এক ম্যাচ, যেখানে ইতিহাস ও আবেগ জড়িয়ে আছে। আশা করছি, এ ম্যাচে দর্শকপূর্ণ গ্যালারি থাকবে, যা প্রমাণ করবে বাংলাদেশ ফুটবল বেঁচে আছে’—ফাইনাল ম্যাচ সম্পর্কে কালবেলাকে বলছিলেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও ল্যামোস।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com