হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল চতুর্থ দিন শেষ বেলায়। চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিন তেমন কিছু পাওয়ার ছিল না বাংলাদেশের। যদিও সকালের ঝলমলে রোদে সাগরিকায় ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেটাও পাওয়া হয়নি বাংলাদেশ অধিনায়কের। ৮৪ রান করে সাজঘরে ফেরার পথে দলের শেষটাও দেখে নিলেন তিনি।
পঞ্চম দিনের শুরুটা করেছিলেন আগের দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটার সাকিব ও মিরাজ। দু’জনের নিচে থাকা লেজের ব্যাটাররা যে শুধুই সংখ্যা, তাদের তা অজানা থাকার কথা নয়। শেষ দিনে এ জুটি কতদূর যায়, সেটাই দেখার ছিল। কিন্তু ভারতীয় বোলাররা বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখেননি কাউকে। শীত উপেক্ষা করে সকালে শ’খানেক দর্শক এলেও বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয়নি তাদের। কর্মজীবী হলে দ্রুতই কাজে যোগ দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় পেয়েছেন তারা। সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচ স্থায়ী ছিল ৪৯ মিনিট। টাইগারদের দ্বিতীয় ইনিংস ৩২৪ রানে থামিয়ে ১৮৮ রানের জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ এগিয়ে গেল লোকেশ রাহুলের দল। ২২ ডিসেম্বর ঢাকায় সিরিজ বাঁচাতে লড়বেন সাকিবরা।
পঞ্চম দিন জেতার জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৪২ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। ড্রয়ের আশা করলেও টিকে থাকতে হতো ছয় ঘণ্টা। আগের দিন শেষ সেশনে জাকির হাসান, মুশফিকুর রহিম ও নুরুল হাসান সোহান বিদায় নেওয়ায় কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। শেষ দিনের সকালের শুরুতে মিরাজ ফেরার পর সব আশাই শেষ হয়ে যায়। তবে ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শুরু করা সাকিব কিছুক্ষণ ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন। চার-ছক্কায় সকালটা মাতিয়ে রেখেছিলেন। সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন। পাঁচ বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়ার দারুণ সুযোগ ছিল তার সামনে। কিন্তু ৮৪ রান করতেই ম্যাচসেরা কুলদীপ যাদবের শিকার হন তিনি। মাঠেই হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে। সাকিবকে নিয়ে দুই ইনিংসে ৮ উইকেট পেয়েছেন কুলদীপ। ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্টেই পেলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। আরেক স্পিনার অক্ষর প্যাটেল পেয়েছেন ৫টি।
বাংলাদেশ ম্যাচটা পিছিয়ে গেছে তৃতীয় দিনেই। প্রথম ইনিংসে ভারতের করা ৪০৪ রানে জবাবে মাত্র চার ঘণ্টার মতো টিকে ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। টপ অর্ডার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ১৫০ রানে গুটিয়ে যান লিটন-মুশফিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত আরও ২৫৮ রান যোগ করলে পাহাড়সম লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণীতে এসে প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার আফসোস ঝরেছে অধিনায়ক সাকিবের কণ্ঠে, ‘এটা ব্যাটিং করার জন্য আদর্শ উইকেট ছিল। কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি (প্রথম ইনিংসে)। ৫-৬ মাস পর টেস্ট খেলা আমাদের জন্য আদর্শ না, তবে এখানে কোনো অজুহাত নয়, পুরো কৃতিত্ব ভারতের।’
ম্যাচ হারলেও কিছু প্রাপ্তি আছে। প্রথম ইনিংসে তাইজুল-মিরাজের চারটি করে উইকেট পাওয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে জাকির হাসানের অভিষেকে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি ও সাকিবের রানে ফেরা। অভিষেক ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়া দ্বিতীয় ক্রিকেটার জাকিরে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে সাকিব বলেছেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে জাকির অনেক রান করেছে। আশা করি সে আরও অনেক সেঞ্চুরি করবে বাংলাদেশের জন্য।’