সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের ২২৭ কিমি দখল করে নিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। তবে এ খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছে তথ্য যাচাই সংস্থা ফ্যাক্টওয়াচ।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম, বিবিসি বাংলা এবং মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায় যে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে ৩০০ কিলোমিটার সীমান্তরেখার পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।
ফলে মিয়ানমার অথবা আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সীমানায় এসে ভূমি দখল করে নিয়েছে, এই তথ্যটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করছে ফ্যাক্টওয়াচ।
রিপাবলিক বাংলা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ২৭২ কিমি বাংলাদেশ দখলের খবর প্রকাশ করেছে।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসের বরাতে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে, আরাকান আর্মির মুখপাত্র ইউ খাইং থু খার বক্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে এরই মধ্যে তারা পশ্চিম অঞ্চলের জান্তা বাহিনীর কমান্ড হেডকোয়ার্টার দখলসহ রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিনের বরাতে আরও বলা হয়েছে, যেহেতু সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি দখল নিয়েছে, সে কারণে আমরা সীমান্তে সতর্কতা বজায় রেখেছি, যাতে কোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে।
বাংলা ট্রিবিউন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির বরাতে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহর দখলের দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতির বরাতে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডুর দখল করা সর্বশেষ ঘাঁটি থেকে সেনা কর্মকর্তা ব্রিডেগিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ জান্তা বাহিনীর কয়েক শ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আরাকান আর্মি।
প্রথম আলোর অন্য একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডু দখলে নেওয়ার পরপরই আরাকান আর্মি নাফ নদীতে নৌ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটকরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যাচ্ছেন কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট দিয়ে।
আরাকান আর্মির মংডু দখলের কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে বাংলাদেশের ভূমি দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ফলে সংগত কারণে দখল-সংক্রান্ত তথ্যগুলোকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
মন্তব্য করুন