বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মানুষের মতপ্রকাশ ও বাক স্বাধীনতায় আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন অভিমত প্রকাশ করেছেন। আন্তর্জাতিক অধিকার গ্রুপগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো বাতিলের দাবি জানিয়েছিল, সেই ধারাগুলোই সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা মতপ্রকাশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণমূলক ধারা সংযোজিত হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ চূড়ান্ত রূপ ধারণ করবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কফিনে ঢুকানোর পর এটাই হবে সর্বশেষ পেরেক।
তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের কার্যক্রমে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত প্রক্রিয়াসংক্রান্ত ধারা উল্লেখ নেই। এর ফলে ব্যক্তির গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন হবে, সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাসহ ইচ্ছাধীন কার্যক্রম পরিচালনার ঝুঁকি থাকবে বলে অংশীজনরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এই বিধিমালা অনুমোদিত হলে গোটা দেশটাকেই বাকরুদ্ধ করে তুলবে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা ফ্যাসিজম পাকাপোক্ত করার জন্য কালাকানুনের বহুতর উপকরণ সংযোজন করছেন। তিনি চান তার ক্ষমতার নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা। একের পর ‘এক ড্রাকনিয়ান’ আইন তৈরি করে শেখ হাসিনা একদলীয় শাসনের জয়পতাকা উড্ডিন রাখতে চান। শেখ হাসিনার ক্ষমতা ধরে রাখার বাসনা আরও তীব্রভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে। কিন্তু এইসমস্ত গণবিরোধী আইনের মধ্যেই আওয়ামী সরকার নিজেদের কবর নিজেইরাই খুঁড়বে।
রিজভী আরও বলেন, ব্যাপক বেকারত্ব, চরম মূল্যস্ফীতি, জাতীয় রিজার্ভের ভয়াবহ পতন, কঠিন ডলার সংকট, বিপুল পরিমান খেলাপি ঋণ এবং ব্যাংকগুলো খালি হয়ে যাওয়া, জ্বালানির নিশ্চয়তা ছাড়া একের পর এক ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ, হাজার হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দেশের অর্থনীতির কোমর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ব্যক্তিগত আয় ও জীবনযাত্রার মান দিন দিন প্রকট হচ্ছে। দেশে আর্থিক খাত এখন সবচেয়ে বির্পযস্ত ও নিরাপত্তাহীন। নৈতিকতাহীন, অপচয়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাংকখাত এখন খাদের কিনারে। ভয়াবহ আর্থিক খাতের দূরাবস্থা থেকে মানুষের চোখ সরানোর জন্য সরকার এখন নানা তামাশা ও চক্রান্তের আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, এবারের ঈদে মানুষ নিরানন্দে দিন কাটিয়েছে। গরুর হাটে কেনাকাটা ছিল কম। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গরু খামারিরা গরু বিক্রি করতে না পেরে চরম দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, কারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই দখলদার সরকার জোর করে টিকে থাকার জন্য জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বেচতে শুরু করেছে।
মন্তব্য করুন