কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আবারও দুর্নীতিবাজ নেতৃত্ব জনগণ মানবে না : ডা. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশ | ছবি : কালবেলা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশ | ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, লাগামহীন দুর্নীতি, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার নির্লজ্জ ষড়যন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ায় সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেশে একটি সফল বিপ্লব ও ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সুতরাং এ দেশের মানুষ নতুন করে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও চরিত্রহীন নেতৃত্ব মেনে নেবে না।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতাদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব। দারসুল কোরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. অধ্যাপক আব্দুস সামাদ। উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসাইন, ইয়াছিন আরাফাত, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও জামাল উদ্দীন এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।

ডা. সৈয়দ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ হচ্ছে আল্লাহর বিধান ও রাসুল (সা.) অনুসৃত নীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করা। মূলত, আমাদের আদর্শ হচ্ছে বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ; তার সংগ্রামই হলো আমাদের সংগ্রাম। আল্লাহতায়ালা সব দ্বীনের ওপর দ্বীনে হকের বিজয় দানের জন্যই যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সে কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল রাসুল (সা.)-এর হাত ধরেই। এ বিজয়ের আগেই আল্লাহ তায়ালা মোমিনদের জন্য সুসংবাদ হিসেবে সুরা নসর নাজিল করেছিলেন। সে সময় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে, দলে দলে মানুষ ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। এখন আমাদের দেশে সে পরিস্থিতি অনুভূত হচ্ছে। মানুষ দলে দলে ইসলামের পথে অগ্রসরমান। তাই আমরা যদি আমাদের যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, কর্মতৎপরতা, নিষ্ঠা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, রুকনিয়াত একটি মানের নাম। মূলত, রুকন হওয়া আমাদের টার্গেট না; জীবনের উদ্দেশ্যও নয় বরং আমাদের মূল টার্গেট হলো প্রকৃত মোমিন হওয়া। পবিত্র কালামে হাকিমের সুরা মোমেনুনে আল্লাহ তায়ালা মোমিনদের সফল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আর মোমিন হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জনকে সহজ করে দেয় রুকনিয়াত। মূলত, এটি মোমিন হওয়ার জন্য প্রথম ধাপ মাত্র। বস্তুত, ব্যক্তি জীবনে সবকিছু দ্বীনের আদলে পরিবর্তনের নামই রুকনিয়াত। তাই ব্যক্তির ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলেই একটি সফল বিপ্লব অনিবার্য হয়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের দীর্ঘদিনের অপশাসন-দুঃশাসনে এ দেশে সেকুলারিজমের শেকড় অনেক গভীরে পৌঁছে গেছে। গণপ্রশাসনে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের প্রতিভূরা এখনো বহাল তবিয়তে। একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। তাই দেশ, জাতি ও দ্বীনের বৃহত্তর স্বার্থেই রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রেই স্বৈরাচারের দোসরদের অপসারণ করতে হবে। জাতীয় পাঠ্যসূচি থেকে ইসলামবিরোধী সব অনুষঙ্গ অবিলম্বে অপসারণ করা দরকার। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। মূলত ফ্যাসিবাদের শেকড় এ দেশ থেকে চিরতরে উপড়ে ফেলতে হবে। এজন্য আমাদের নিজেদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য এবং দৃঢ়ভাবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে যখন যে নির্দেশ আসে তা হজরত আবু বকর (রা.)-এর মতো অকুণ্ঠচিত্তে মেনে নিতে হবে। তিনি মিরাজের ঘটনা নিয়ে যেভাবে সত্যের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন আমাদেরও একই আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তাহলেই এ দেশ থেকে সব ধরনের দুর্নীতি, অনাচার, জুলুম-নির্যাতন বন্ধ হবে। অভ্যুদয় ঘটবে নতুন এক বাংলাদেশের। তিনি সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, অপশাসন-দুঃশাসন, গুম, খুন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সব সময়ের সীমা লঙ্ঘন করায় ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম এক অভিনব আঙ্গিকে একটি সফল ও স্বার্থক আন্দোলন করেছে। তারা প্রচলিত হরতালের বিপরীতে বাংলা ব্লকেড, কমপ্লিট শাটডাউন এবং অসহযোগ আন্দোলন করে দেখিয়ে দিয়েছেন এ দেশের মানুষ সব সময় অপরাজেয় ও দুর্জেয়। আর তাদের সে ডাকেই সাড়া দিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। এই আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিল জামায়াতে ইসলামী। তিনি অর্জিত বিজয়কে অর্থবহ করতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন ও অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে জামায়াতের আমিরের বার্তা

বিশেষ সাক্ষাৎকার / মা-ছেলের ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় ক্ষেপে যান ডিবি হারুন

ঢাবিতে জুলাই বিপ্লবে হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা

ঢাবিতে মানববন্ধন / আমেরিকা-ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

কুমিল্লায় বিপুল গাঁজার চালান জব্দ, আটক ৪

বঁটি দিয়ে চুল কাটেন রুনা খান

যুব-ছাত্র-স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ কর্মিসভা / ‘আমরা যদি থাকি সৎ দেশ সংস্কার সম্ভব’

সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সুযোগ বাংলাদেশে নেই: খেলাফত মজলিস

দুই ভারতীয়কে গ্রেপ্তারের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

পরিচালকদের সঙ্গে প্রেম করে কাজ পান স্বস্তিকা

১০

ভারতে বাংলাদেশি তরুণী গ্রেপ্তার

১১

মাহমুদুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে হেফাজতের অভিনন্দন বার্তা

১২

ছাত্র আন্দোলনে নারীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা

১৩

জাতিসংঘে বিবিএনজে চুক্তির নথি জমা দিয়েছে বাংলাদেশ

১৪

মায়ের সঙ্গে শহীদ হওয়ার গল্প বলতেন খোবাইব

১৫

‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠিত হলে শহীদদের রক্তের মূল্যায়ন হবে’

১৬

ভাষাসৈনিক প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল গফুর আর নেই

১৭

টাইগার রবির ঘটনায় ভারতীয় পুলিশের বক্তব্য

১৮

১৩ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে নিয়ে ট্রাম্পের চিন্তা নেই : কমলা হ্যারিস

২০
X