শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আবেদ খান
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১০:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

একটি বিশেষ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদ খানের বক্তব্য

একটি বিশেষ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আবেদ খানের বক্তব্য

রাজধানীর ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের পরিত্যক্ত ২৯ নম্বর বাড়িটি সরকারের বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আলোচনা তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন দৈনিক জাগরণের সম্পাদক ও দৈনিক কালবেলার প্রধান সম্পাদক আবেদ খান।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন সাংবাদিক আবেদ খান। তার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো—

গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার বিষয়ে বিপুল সমালোচনার ঝড় লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে মহামান্য আদালতের একটি রায়ে আমাকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে একটি তথ্য গোপনের অভিযোগে এটি পত্রপত্রিকায় আসার পর থেকেই শুরু হয় এই ঝড়।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আইনের ব্যাপারে আমার পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। তাই অবশ্যই রায়ে প্রদত্ত শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব এবং বর্ণিত মামলা নিয়েও আমি কোনো মন্তব্য করব না। কারণ এটা আইন আদালতের এখতিয়ার। তবে বিষয়টির সঙ্গে যে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই তা আদালতের নথিতে উল্লিখিত রয়েছে বলে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমি অবগত হয়েছি। উল্লেখ্য, যে মামলার রায় নিয়ে পত্রপত্রিকা কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এত লেখালেখি হলো সেই মামলার কোনো শুনানিতেও আমি কখনো যাইনি এবং যাওয়ার সামান্যতম প্রয়োজনও অনুভব করিনি।

দ্বিতীয়ত, যে বিষয় নিয়ে এতকিছু হয়ে চলেছে তার সূচনা হলো আমার প্রয়াত পিতার একটি সম্পত্তি। সেই ১৯৫৫ সালের তদানীন্তন সরকারের বরাদ্দপত্র এবং এতদসংক্রান্ত দলিলপত্র ও চালানের জীর্ণ কাগজ আমার পরলোকগত মায়ের ট্রাংক থেকে আবিষ্কার করার পর আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা প্রয়াত মোহাম্মদ তোহা খানকে যেহেতু পরিবারের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে আমরা মান্য করি তাই তার কাছে উপস্থিত করি। তিনি তখন আমাকে বলেন যে, এ নিয়ে ছোটাছুটি করার সময় এবং অর্থসংগতি কোনোটাই তার নেই। কাজেই এ বিষয়ে আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমার মেজ ভাই প্রয়াত মন্টু খানকে এই বিষয়টি জানালে তিনিও একমত পোষণ করেন। এরপর আমি সেটেলমেন্ট কোর্টে দরখাস্ত করি এবং দৈনিক ইত্তেফাকে আমার জমানো প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে টাকা নিয়ে আমি মামলা বাবদ ব্যয় করতে শুরু করি। এতে আমার সব সঞ্চয় নিঃশেষ হয়ে যায় এবং ক্রমাগত উকিলের ব্যয় বহন করতে করতে একসময় হতাশ হয়ে পড়ি। এর পরিণতিতে আমার বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়। তবে আইনজীবীর পক্ষ থেকে আমাকে বারবার ওই মামলায় আপিল করার জন্য চাপ দিতে থাকলেও আমি আর আপিল করতে পারিনি অর্থের অভাবের কারণে। সে সময় আদালত পাড়ারও অনেকে আমাকে বারংবার অনুরোধ করেছেন কিন্তু আমার সাধ্য কিংবা সঙ্গতি কোনোটাই ছিল না।

এই ঘটনার অনেকদিন পরে আজ থেকে প্রায় বছর সাতেক আগে যখন এই প্লটটি নিয়ে পত্রিকায় আবার লেখা হয় এবং তাতে আমাদের নাম উঠে আসে তখন আমি কথা প্রসঙ্গে হয়তো এই বিষয়টি আলোচনা করেছি কারও কারও সঙ্গে। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উৎসাহী শুভাকাঙ্ক্ষী স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি রিট আবেদনে আমার স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। কিন্তু সেই রিট আবেদনে আমি যে আগে সেটেলমেন্ট কোর্টে মামলা করেছিলাম তার কোনো উল্লেখ করা হয়নি। এটাই ছিল ত্রুটি। এই রিট আবেদনটি যে আইনজীবী আমার পক্ষে উপযাচক হয়ে করেছিলেন, আমি সরল বিশ্বাসে তার করা ওকালতনামা পাঠ না করেই স্বাক্ষর প্রদান করেছিলাম। সেখানে কোনো তথ্য উল্লিখিত না হলে সেটা অসাবধানতা হলেও তার দায় তো আমাকে নিতেই হবে। কারণ আমি সেই ওকালতনামায় যে স্বাক্ষর করেছি তা তো বিজ্ঞ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

পুরো প্রক্রিয়ায় এটুকুই আমার সংশ্লিষ্টতা। অথচ আমি বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করলাম আমার সম্পর্কে যেসব লেখা প্রকাশিত হলো এবং আমাকে রীতিমতো আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বাণবিদ্ধ করা হলো সে প্রসঙ্গে আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসাও করল না, একটি কথা জানালও না। এমনকি সাংবাদিকতার যে মৌলিক নীতিমালা আছে সেটি পর্যন্ত অনুসৃত হলো না। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, আমি আমার জীবনের ছয়টি দশক ধরে এই পেশায় অবস্থান করছি এমনকি সাংবাদিকতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি, সংবাদপত্রের নীতিনির্ধারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু আমাকেই এর মর্মান্তিক শিকার হতে হলো।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে যারা মূল সাংবাদিকতার অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন তারা নিশ্চয়ই এর জটিল এবং কুটিল পরিণতি সম্পর্কে অবহিত আছেন। আর আমার সঙ্গে যারা কাজ করেছেন, আমার সহকর্মী কিংবা সহধর্মী ছিলেন আমার ধারণা ছিল তারা আমার চিন্তা-ভাবনা, আমার সততা, বিশ্বাস, আমার কার্যক্রম এবং ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আজ সেই ধারণায় বুঝি ফাটলই দেখা দিয়েছে। অবিশ্বাস্য রাহুগ্রাস আমাদের সমস্ত মূল্যবোধকে উদরাসাৎ করে চলেছে। অগ্রজ বন্ধু অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ পেশাগত জীবনের অন্তে নিজেকে চিত্রিত করেছিলেন ‘নিষ্ফলা মাঠের কৃষক' হিসেবে। আমিও কী বলব যে আমি এক তুষারধবল পর্বতাভিযানের নিঃসঙ্গ শেরপা? আমি সবসময় সৎ সাংবাদিকতার বৈভব নিয়ে গর্বিত থেকেছি, কিন্তু আজ আমি কোন শক্তিতে ভর করে রুখে দাঁড়াব? এখন যদি বলি, আমার সম্পর্কে যা কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলা হচ্ছে তা সর্বৈব অসত্য, তা কতজন মানবে? প্রত্যেকেই তো নিজ নিজ প্রতিরক্ষা ব্যূহ তৈরি করে রেখেছে। এমন সব তথ্য পরিবেশিত হচ্ছে যা দেখলে নিজের অস্তিত্বই বিস্মৃত হতে হয়।

তবে আমি এরপরেও দাবি করি, আমি সব হতাশার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি থাকি বা নাই থাকি সত্যের সূর্য এক দিন উদিত হবেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মতিঝিল আইডিয়ালের গভর্নিং বডির নির্বাচন অনুষ্ঠিত

খরুচে বোলিং মোস্তাফিজের, চেন্নাইয়ের হার

এফডিসিতে ৫৭০ ভোটারের সংবাদ সংগ্রহে ৩০০ সাংবাদিক

যশোরে অধিকাংশ টিউবওয়েলে মিলছে না পানি

বিদেশি শ্রমিকদের সুখবর দিল কুয়েত

এফডিসিতে ফিরেছেন নির্বাচন কমিশনার, খোঁজ নেই নিপুনের

চাঁদপুরে পূবালী ব্যাংক কর্মকর্তা নিখোঁজের ঘটনায় ৮ কর্মকর্তা বদলি

বিআরটিএর অভিযানে ৪০৫ মামলা, ১০ লাখ টাকা জরিমানা 

প্রেমিককে কুপিয়ে জখম, প্রেমিকা আটক

আরও ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি

১০

‘গোপালগঞ্জের সঙ্গে রাজধানীর রেল যোগাযোগ অচিরেই চালু হবে’ 

১১

‘আমাদের নিজেদের এবং দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যেতে হবে’

১২

শ্যালকের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলেন পলক 

১৩

উৎকলিত রহমানের কবিতা ‘জ্যোতিষ্ময়ীর গান’

১৪

পাবনায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

১৫

পহেলা বৈশাখে প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী

১৬

আবহাওয়া নিয়ে আরও বড় দুঃসংবাদ

১৭

উপজেলা নির্বাচনের নামেও প্রহসন করছে সরকার : ভিপি নুর

১৮

ফ্রান্সের ইরানি দূতাবাসে বোমা আতঙ্ক, আটক ১

১৯

দুই কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্ক, প্রধান কারারক্ষীসহ বদলি ৩

২০
*/ ?>
X