রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের লোগো। ছবি : সংগৃহীত
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের লোগো। ছবি : সংগৃহীত

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কঠোর আন্দোলনরে প্রস্তুতি নিচ্ছে বৈষম্য নিরসনে গঠিত সরকারি কর্মকর্তাদের কমিটি 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’। মানববন্ধন, সভা-সমাবেশসহ চারদিনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই কমিটি।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকায় সেগুনবাগিচাস্থ পূর্ত ভবনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা থেকে এ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্ভূত পরিস্থিতি বিষয়ে বিবৃতি প্রদান, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সকল অফিসে কলমবিরতি, বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সকল অফিসে স্ব-স্ব কর্মস্থলের সামনে মানব বন্ধন। এছাড়া আগামী ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ।

'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ' এর সঙ্গে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতাদের এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ২৫ টি ক্যাডারের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা রেখে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস হতে আলাদা করার সুপারিশের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত 'আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ' এর সাথে কোনো রকম আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় ।

সভায় বক্তারা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনসমূহের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সরকারের সকল নীতি নির্ধারণ করে এবং বাস্তবায়নে নেতৃত্ব প্রদান করে সিভিল প্রশাসন; যা বর্তমানে ২৬টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত। যেখানে কার্যকর রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আমূল পরিবর্তন দরকার, সেখানে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বৈষম্যমূলকভাবে উপসচিব পুলে একটি ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা সুপারিশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করায় সিভিল সার্ভিসের অন্য ২৫টি ক্যাডারের সকল সদস্যের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, কমিশনের এ সকল সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়ে একটি গ্রুপ ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রচার শুরু করেছে। সিনিয়র সার্ভিস পুল (বা উপসচিব পুল) এর পদসমূহ কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। Service Act 1975 অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এ সকল পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার। এছাড়া ২০১৮ এর নির্বাচনের পর Service Act 1975 রহিত করে ২০২৪ এর নির্বাচনের পর এ সকল পদ নিজেদের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করেছে প্রশাসন ক্যাডার, যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনে মারাত্মক অন্তরায়।

বক্তারা আরও বলেন, সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ হতে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি করা হয়েছে অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। তাছাড়া সকল সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও বৈষম্য রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। দেশের মানুষ প্রকৃত জনসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জনবান্ধব সরকারের পরিবর্তে দেশে বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে জনবিচ্ছিন্ন স্বৈরাচারী সরকার।

পাশাপাশি তারা বলেন, কমিশন কর্তৃক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস থেকে আলাদা করতে চাওয়া জনমনে নতুন সন্দেহের উদ্রেক করেছে। কমিশনের এ সকল সিদ্ধান্ত সিভিল সার্ভিসের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে জোর দাবি করেন বক্তারা। এ ছাড়া সম্প্রতি জনপ্রশাসন সচিব মিডিয়ার সামনে প্রশাসন ক্যাডারের বঞ্চিত সদস্যদের ভূতাপেক্ষভাবে গ্রেড-১ প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন, যার মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত ও মৃত সদস্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অথচ অন্যান্য ক্যাডারকে গ্রেড-৪ বা গ্রেড-৩ এর মধ্যে তাঁরা আটকে রেখেছেন তারা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের আহ্বান

কিশোর বয়সে প্রেম ও বিয়ে, অতঃপর যা ঘটল

বিজিএমইএ প্রশাসকের সাথে নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তি ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে 

‘ট্রাফিক পুলিশের প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকদের গন্তব্যে পৌঁছানো’ 

তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দিতেই সারাদেশে কৃষক সমাবেশ : টিএস আইয়ূব

শহীদ সুজনের মেয়েকে নিয়ে দুর্ভাবনায় দিন কাটছে রেখা বেগমের

বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন গুলিবিদ্ধ, আহত ১০

আমরা জনবান্ধব পুলিশ হতে চাই : ডিবি প্রধান

হেলিকপ্টারে চড়িয়ে মায়ের ইচ্ছে পূরণ করলেন আয়নাল

১০

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর ঘরে তালা দিলেন ইউপি সদস্য

১১

দেশে দখলবাজের পরিবর্তন হয়েছে, দখলদারত্ব বন্ধ হয়নি : হাসনাত

১২

পয়েন্ট পেল ফকিরেরপুল, ওয়ান্ডারার্স

১৩

১৮ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

১৪

এমএ আজিজ স্টেডিয়াম পেল বাফুফে

১৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

১৬

কাবাডির পাশে থাকার আশ্বাস ক্রীড়া উপদেষ্টার

১৭

ভারতের মাতব্বরি নয়, বিএনপি বন্ধুসুলভ আচরণ চায় : গয়েশ্বর

১৮

ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের ৭ শিশু নিহত

১৯

পুনর্মিলনী করবে ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন যশোর ৯৫ ব্যাচ

২০
X