কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা একমত

‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ছবি : কালবেলা
‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ছবি : কালবেলা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন, এবতেদায়ি মাদ্রাসাকে লালন করতে না পারলে ইসলামি শিক্ষা অসম্ভব হবে। এবতেদায়ি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, এটি একটি বৈষম্য। এবতেদায়ি শিক্ষকদের দাবি পূরণে আমি শিক্ষামন্ত্রীকে ডিও লেটার দেব। আশা করি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ দাবি পূরণ করতে না পারলেও মোটামুটি কিছু কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।

‘স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক ফোরাম’-এর উদ্যোগে শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় এবতেদায়ি শিক্ষকরা বৈষম্য দূরীকরণে ৭ দফা‌ দাবি উপস্থাপন করেন।

উপদেষ্টা বলেন, আগামীর শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠ্যপুস্তক নির্ভুল করার জন্য আমরা চেষ্টা করব। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রত্যেকে‌ নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে যাতে শিখতে পারে সে ব্যবস্থা করব। এ দেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা, ধর্ম চর্চা ও ধর্ম শিক্ষার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার। আপনারা আপনাদের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টাকে দিন। আপনাদের দিলের দাবির সঙ্গে আমি একমত। আপনারা যাতে প্রশিক্ষণ ও পুস্তক পান সে আলোচনা উত্থাপন করব।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ফাউন্ডেশনের গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. আবদুস সবুর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবদুল মুমিন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ড. আবদুস সবুর মাতুব্বর, আজাদুর রহমান, শিক্ষক নেতা আমজাদ হোসেন প্রমুখ। এতে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুহাম্মাদ মাসউদুর রহমান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ‌ করা হলেও এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নাস্তিকদের দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এই সরকার যদি জাতীয়করণ না করে তবে এগুলো কারা করবে। যে শিক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে এগুলোর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের চরিত্র ধ্বংস করতে চেয়েছে। কোরআন-হাদিসের শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খান বলেন, এবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা শুধু নয়, লাখ লাখ এবতেদায়ির ছাত্রদের উপবৃত্তি না দিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে। এ বৈষম্য দূর করা না হলে আমরা ছাত্র-শিক্ষকদের বৈষম্য দূর করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে সমাবেশ আয়োজন করতে বাধ্য হব।

জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া বলেন, ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে এবতেদায়ি মাদ্রাসা। রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো এবতেদায়ি মাদ্রাসাকে জাতীয়করণ করতে হবে।

আলিয়া মাদ্রাসার সূতিকাগার ‘স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার অস্তিত্ব রক্ষা এবং ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বৈষম্য দূর করতে অধিকার বঞ্চিত বৈষম্যের শিকার অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবন যাপনকারী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত দাবিগুলো উত্থাপন করা হয় :

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক স্ট্যাডি রিপোর্টের আলোকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্রে এবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণ করতে হবে।

২. স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন-ভাতাদি/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৪ দ্রুত বাস্তবায়নের ঘোষণা দিতে হবে।

৩. স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

৪. রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো মাদ্রাসা বোর্ডের কোডের অন্তর্ভুক্তকরণ করতে হবে।

৫. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসায় ১ জন অফিস সহায়কের পদ সৃষ্টি করা।

৬. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি খোলার অনুমোদন করে তদস্থ নাহলে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থাকরণ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিধানসভা উপনির্বাচন / পশ্চিমবঙ্গে ৬ আসনেই তৃণমূলের জয়

জোর করে পদত্যাগ করানো সেই উপাধ্যক্ষের হৃদরোগে মৃত্যু!

বিচ্ছেদের যন্ত্রণা নিয়ে পরীমণির স্ট্যাটাস

টেস্টে হাসানের দারুণ রেকর্ড

নির্দোষ ব্যক্তিদের নামে হওয়া মামলা আইন মেনে প্রত্যাহারের নির্দেশ

ব্র্যাকের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হটলাইন ‘মনের যত্ন’ চালু

৮ মাসে কোরআন মুখস্থ করলেন ৮ বছরের ওমর

নৌবাহিনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনী

বিধানসভা নির্বাচন / ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি-কংগ্রেসের, মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের জয়

বেসিস ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত

১০

নেতাদের বাঁচার উপায় বাতলে দিলেন তারেক রহমান

১১

গল্পে গল্পে পাপনকে খোঁচা ফারুকের

১২

পাকিস্তানে কাল আরেক অভ্যুত্থান হবে?

১৩

ছাত্র আন্দোলনে ‘২৮ রাউন্ড গুলি’ করা সেই তৌহিদ গ্রেপ্তার  

১৪

‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪৩১’ পেলেন নূরে জান্নাত ও নুসরাত নুসিন

১৫

আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে সেই অধ্যক্ষ বরখাস্ত

১৬

ঢাকাবাসীকে যে কোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার

১৭

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে পিটুনি

১৮

মানসিক ট্রমায় ইসরায়েলি সেনাদের আত্মহত্যা

১৯

৪৯ দিনে হাফেজ হওয়া সেই হাবিবুরের ইচ্ছাপূরণ করলেন আহমাদুল্লাহ

২০
X