
আমাদের গোলাকার পৃথিবীর একদম তলদেশে অবস্থিত মহাদেশটির নাম অ্যান্টার্কটিকা। এটি একাধারে বিশ্বের শীতলতম এবং শুষ্কতম মহাদেশ। বিশ্বে বরফ হিসেবে জমাটবদ্ধ সুপেয় পানির শতকরা প্রায় ৯০ ভাগই এই মহাদেশে অবস্থিত।
দুর্গম হওয়ায় তাই এই অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে গুজবের কোনো কমতি নেই। পাঠক, পাঁচ পর্বের ধারাবাহিক এই লেখায় গুজবকে পাশ কাটিয়ে দুর্গম ও রহস্যময় অ্যান্টার্কটিকা সম্পর্কে জানাবো খাঁটি ও নিরেট তথ্য।
মহাদেশ হিসেবে তো বটে, পৃথিবীতে বিদ্যমান স্থলভাগগুলোর মধ্যেও অ্যান্টার্কটিকা সবার শেষে মানুষের নজরে এসেছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এই মহাদেশটি আবিষ্কারের কৃতিত্ব একেবারে উল্টো দিকের উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থিত দেশ রাশিয়া দখলে রয়েছে।
তবে আবিষ্কারের আগে মহাদেশটির আশপাশ দিয়ে অনেক অভিযাত্রী দল পার হলেও তারা আন্টার্কটিকার টেরিটোরিতে প্রবেশ করতে পারেনি।
ব্রিটিশ নাবিক জেমস কুক প্রথম ১৭৭৩ সালে মহাদেশটির পাশ দিয়ে অতিক্রম করেন। এর প্রায় ৫০ বছর পর ১৮২০ সালে রুশ দুই অভিযাত্রী ফ্যাবিয়ান গটলিব ও মিখাইল লাজারেভ অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশটি আবিষ্কার করেন।
এটি এতটাই দুর্গম যে আবিষ্কারের ৭৫ বছরেও সেখানে কোন মানুষের পায়ের ছাপ পড়েনি। এর মূল কারণ, অ্যান্টার্কটিকার দূরত্ব এবং এর আবহাওয়া। শেষ পর্যন্ত ১৮৯৫ সালে নরওয়ের একদল অভিযাত্রী অ্যান্টার্কটিকায় পা রাখেন।
বরফের স্বর্গরাজ্যেও আগ্নেগিরি
বরফে ঢাকা এই মহাদেশে লুকিয়ে থাকা একাধিক আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ব্যাপক অনুসন্ধান ও পরিসংখ্যান শেষে ২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন অ্যান্টার্কটিকার কঠিন বরফের নিচে রয়েছে মোট ১৩৮টি আগ্নেয়গিরি।
এসব আগ্নেয়গিরির প্রায় সবগুলোই সুপ্ত। অর্থাৎ এসব আগ্নেয়গিরি থেকে লাভার উদগিরণ হয় না। তবে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন খুব সম্প্রতি সক্রিয় ছিলো এমন আগ্নেয়গিরিও সেখানে রয়েছে।
পেঙ্গুইন আইল্যান্ড ১৯০৫ এবং ডেসিপশন আইল্যান্ড আগ্নেয়গিরি ১৯৭০ সালেও সক্রিয় ছিলো বলে জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মহাদেশের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সিডলি, আর সবচেয়ে ছোট সেই পেঙ্গুইন আইল্যান্ড।
মহাদেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র অ্যান্টার্কটিকাতেই কোন স্থানীয় বাসিন্দা নেই। তাহলে কারা এসে এখানে বসবাস করছে? কোন নিয়মে চলছে সেখানকার সবকিছু? পাঠক, আমরা এসব প্রশ্নের উত্তর জানবো আগামী পর্বে।