ডা. হেমন্ত রায় চৌধুরী
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৫৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে

দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা। আশঙ্কার ব্যাপার হলো, এতে আক্রান্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণীরাও। একটু সচেতন থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব ডা. হেমন্ত রায় চৌধুরী-

কেন হয়

পারিবারিক ইতিহাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, খাবারে অনিয়ম ইত্যাদি কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে হৃৎপিণ্ডের ধমনির দেয়ালে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বি জমা হতে থাকে। এতে রক্ত প্রবাহ নালি বা ধমনি ধীরে ধীরে ব্লক হয়ে যায়। হৃদযন্ত্রে রক্ত ​​প্রবাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়।

এ ছাড়া ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের কিছু রোগ ধমনিতে ব্লকের কারণ হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যৌন উত্তেজক ওষুধের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, ব্লাড প্রেশারের ওষুধ নিয়মিত না খাওয়া—এসব কারণেও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।

কী করবেন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখে শরীরচর্চা। প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে ৭০ ভাগ। নিয়মিত হাঁটলে রক্তচাপের পাশাপাশি কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তোলা, ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং আরও অনেক রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে নিয়ম করে হাঁটা ও শরীরচর্চার অভ্যাস।

প্রচুর তাজা ফল, শাকসবজি, বাদাম, ডাল, স্বল্প-চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, আস্তা শস্যদানা এবং মাছ খেতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফল হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি রাখুন খাদ্য তালিকায়।

প্রক্রিয়াজাত, পরিশোধিত ও প্যাকেটজাত খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এসব খাবারে থাকে অতিরিক্ত চিনি, চর্বি, লবণ এবং সংরক্ষণকারী নানা উপাদান। খাবার তালিকা থেকে লাল মাংস, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড ও জাঙ্কফুড যতটা সম্ভব বাদ দিন।

নেশাকে না বলুন। সব ধরনের তামাক খুবই বিপজ্জনক। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা তামাকজাত পণ্য ব্যবহার বন্ধ করেছেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অর্ধেক কমেছে। অ্যালকোহল বা অন্য যে কোনো কঠিন পানীয়ের ক্ষেত্রে সংযমই একমাত্র চাবিকাঠি। গবেষণা বলছে, যারা কম মদ্যপান করেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি শতকরা ১১ শতাংশ কমে যায়।

হাইজেনিক স্লিপ প্যাটার্নও বজায় রাখতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিয়ম করে প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। এর ব্যতিক্রম ঘটতে থাকলে বাড়তে থাকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।

হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে মানসিক চাপ সামলাতে শিখুন। প্রতিদিনের নানা ঝামেলা, ক্রমবর্ধমান কাজের চাপ ও দুশ্চিন্তাও হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ। স্ট্রেসের সময় নিঃসৃত কর্টিসল হরমোন রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। এতে রক্তনালিতে জমাট বাঁধার আশঙ্কা বাড়ে। চাপ কমাতে প্রতিদিন যোগব্যায়াম অব্যর্থ দাওয়াই। সেটা না হলে অন্তত দিনে তিন থেকে চারবার দমের ব্যায়াম করুন। চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে দম নিয়ে কিছুক্ষণ দম আটকে রাখুন। এর পর ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন। প্রক্রিয়াটি একেক দফায় অন্তত ১০ বার করুন।

লেখক : নিউরো রেডিওলজিস্ট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, ঢাকা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হাতি শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারল কৃষককে

বাবার বাড়ি যাওয়ায় স্ত্রীকে ২৭টি কোপ দিলো স্বামী

সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ব্যারিস্টার খোকনের দলীয় পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি 

বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

বাংলাদেশের দাবদাহ নিয়ে যা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

অনুষ্ঠিত হলো বিইউএইচএস -এর প্রথম সমাবর্তন

ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে : ম্যাখোঁ

ছেলেদের দোষে ডুবছেন মাহাথির মোহাম্মদ

হিজাব আইন না মানায় ইরানে ব্যাপক ধরপাকড়

১০

তীব্র তাপপ্রবাহে বৃষ্টি চেয়ে হাজারো মুসল্লির কান্না

১১

মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

১২

ঝিনাইদহে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

১৩

কারিগরির ফাঁকা সনদ মিলল তোষকের নিচে, গ্রেপ্তার কম্পিউটার অপারেটর

১৪

ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

১৫

ভোট দিলে যে শহরে মিলবে ফ্রি বিয়ার, ট্যাক্সিসহ নানা সুবিধা

১৬

কুমিল্লায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু

১৭

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

১৮

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ

১৯

সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী 

২০
*/ ?>
X