
শীতের সকাল। কুয়াশার রেশ তখনো কাটেনি। ঘড়ির কাঁটা বলছে ৬টা ১৫ মিনিট। রাস্তায় তেমন ভিড় নেই। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলের সামনে দেখা গেল চিত্রটা অন্য দিনের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। বেশ ভিড়। দলে দলে মানুষ ঢুকছেন। কোনো বিপণিতে বিশেষ ছাড় তো চলছে না। তাহলে? নিরাপত্তাকর্মীদের আলোচনায় স্পষ্ট হলো বিষয়টি।
‘পাঠান’-এর প্রথম দিনের প্রথম শো। শাহরুখ অনুরাগীদের আর তর সইছে না। স্বাভাবিক নয় কি? চার বছরের প্রতীক্ষার অবসান। আবারও বড় পর্দায় হাজির হচ্ছেন বলিউড কিং। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ৬টা ছুঁয়েছে। হাতে আর মাত্র পনেরো মিনিট। এদিকে মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে লম্বা লাইনে উৎসুক দর্শকের ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা। কারও চোখ লাল, তো কেউ চোখ ডলছেন। হাই তুলছেন কেউ কেউ। উত্তেজনায় কেউ সারা রাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি। কেউ আবার ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে কাকডাকা ভোরে উঠে বেরিয়ে পড়েছেন। ফুড কর্নার থেকে নেওয়া গরম কফির কাপটাই তখন একমাত্র ভরসা। আগামী ২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট বলিউড বাদশা যে তাদের অন্য জগতে হাজির করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
‘পাঠান’-এর অগ্রিম বুকিং শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রথম কয়েক দিনের শোয়ের টিকিট বিক্রি প্রায় শেষের দিকে। মঙ্গলবার সকালে জানা যায়, আইনক্স সকাল ৭টার ও আগে এ ছবির শোয়ের ব্যবস্থা করেছে। মঙ্গলবার সংস্থার রিজিওনাল ডিরেক্টর (ইস্ট) অমিতাভ গুহঠাকুরতা বলেন, 'দর্শকদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। সাধারণত ইংরেজি ছবির ক্ষেত্রে আমরা সকাল ৭টায় শো দিই। কিন্তু হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে অনেক বছর পর এত সকালে শো দেওয়া হলো।' প্রথম দিন শহরের বেশির ভাগ মাল্টিপ্লেক্সই সকালের শো রেখেছে।
মঙ্গলবার প্রথম শো-তে সাধারণ দর্শক ছাড়াও শাহরুখের বিভিন্ন ফ্যান ক্লাবের সদস্যরাও ভিড় করেছেন। তাদের কথায়, ‘এটা আমাদের কাছে উৎসব। শো থাকলে আরও সকালে চলে আসতাম।’ কেউ কেউ আবার জানালেন, প্রথম শো শেষে আবার দ্বিতীয়বার ‘পাঠান’ দেখার জন্য প্রস্তুত তারা। অনেকের টিকিটও কাটা। প্রেক্ষাগৃহের কর্মীরাও জানালেন ‘অ্যাভাটার : দ্য ওয়ে অব ওয়াটার’-এর সময়েও এমন ভিড় হয়েছিল। কিন্তু ‘পাঠান’ সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে।
বুধবার সারা দিনটা বলিউড সিনেমার ইতিহাসে যে বিশেষ অধ্যায় হয়ে রয়ে যাবে, সকাল সকাল তার এক ঝলক কলকাতার দর্শকই প্রমাণ করে দিলেন। চলতি সপ্তাহে শাহরুখের ছবি বক্স অফিসে আর কী কী রেকর্ড করে, সেদিকেই সবার নজর থাকবে।