
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক সভাপতি মরহুম প্রফেসর এ বি এম জনাব আলী স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে এ শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর। সভায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির প্রাক্তন ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ প্রফেসর জনাব আলীর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, ইস্ট পাকিস্তান এডুকেশন সার্ভিস থেকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে রূপান্তরের পথটি ছিল কণ্টকাকীর্ণ। প্রফেসর আলীর আত্মত্যাগ সেই লড়াইয়ের পথ সৃষ্টি করেছে।
এ সময় বক্তব্য দেন প্রফেসর মো. কফিল উদ্দিন, প্রফেসর ফাহিমা খাতুন, প্রফেসর মো. মাসুমে রব্বানী খান, আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, প্রফেসর খান হাবিবুর রহমান, প্রফেসর আবদুস সামাদ, প্রফেসর ড. মীর মাহফুজুল হক, প্রফেসর ড. মো. মোরশীদুল হাসান প্রফেসর ড. আ জ ম রুহুল কাদীর প্রমুখ। এ ছাড়া স্বাগত বক্তব্য দেন জিয়া আরেফিন আজাদ। সভা সঞ্চালনা করেন প্রফেসর মো. মামুন উল হক।
বক্তারা বলেন, প্রফেসর এ বি এম জনাব আলী ছিলেন আজীবন সংগ্রামী। সরকারি কলেজের শিক্ষকদের গ্রেড ৫-৬ এ আটকে ছিল। জনাব আলী ও তার সহকর্মীদের টানা ৫৪ দিন পরে ৮৪ দিনের আন্দোলনে সামরিক সরকার চার নম্বরে তুলতে বাধ্য হয়। ১৯৮৪ সালে মহাপরিচালকের পদটিতে বসেছিলেন এক সামরিক কর্মকর্তা। জনাব আলীদের আন্দোলনের ফলে সে পদ শিক্ষকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অনেক অসাম্য থাকলেও ১৯৭৮-৭৯ পর আর গ্রেড উন্নয়ন হয়নি। ভোলা কলেজের সে সময়ের অধ্যক্ষ আমির হোসেনকে ভূতাপেক্ষিক জ্যেষ্ঠতা দিয়ে মহাপরিচালকেরও উপরে বসানোর রায় হয়। ক্যাডারের সে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য গঠিত হয় বিপর্যয় প্রতিরোধ কমিটি। সে বিপর্যয় থেকে ক্যাডারকে রক্ষা করা হয়।
প্রফেসর ফাহিমা খাতুন বলেন, ১১৩ জন ছিলেন বিসিএস কর্মকর্তা অথচ সে সময় সরকারি করা হয় ১৩২টি কলেজ। সরকারি কলেজের সংখ্যার চেয়েও বিসিএস শিক্ষক ছিলেন কম। ২২ বছরের বিসিএস প্রভাষক আর ৭ বছরের আত্তীকৃত সহকারী অধ্যাপকের অধীন চাকরি করতে বাধ্য হয়েছে। সে সময়ে শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছেন জনাব আলী। স্যারকে বদলি করা হয়, বেতন বন্ধ হয়ে যায়, প্রলোভন দেওয়া হয় তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ করা হবে শিক্ষক-আন্দোলন ছেড়ে দিলে। তিনি কোনো কিছুতেই পিছিয়ে যাননি, আপস করেননি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রফেসর জনাব আলীর মতো সৎ-মন ও সৎ-ইচ্ছা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই অর্জন হতে পারে।