
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে পরিকল্পিতভাবে বাঙালিকে মেধাশূন্য করতে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তখন রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দেশ। বিশ্বের কোথাও এমন হত্যার নজির নাই। এই হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছিল পাক হানাদারদের এদেশি দোসররা।’
আজ বুধবার সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে সভায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক মীর আব্দুল কাইয়ূমের স্ত্রী অধ্যাপক মাসতুরা খানম স্মৃতিচারণ করেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামাণিক।
উপাচার্য আরও বলেন, ‘এই রাজাকার ও আলবদরেরা খুঁজে খুঁঁজে এই বুদ্ধিজীবীদেরকে হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও বাঙালি দমে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে, রক্ত ও জীবন দিয়ে এই দেশ মুক্ত করেছিল।’
সভায় স্বামীর স্মৃতিচারণ করে অধ্যাপক মাসতুরা খানম বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকেরা পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। হানাদার বাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। ক্যাম্পাসের জোহা হলের বন্দিশালায় ধরে নিয়ে আসা মানুষের ওপর নির্যাতন চলত। এ ছাড়াও মন্নুজান হল, পশ্চিমপাড়ার ১৭ নম্বর কোয়াটার, জুবেরী ভবনে তারা নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী কণ্ঠগুলো স্তব্ধ করতেই তারা এই ক্যাম্পাসে নির্মম হত্যাযজ্ঞ ও নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছিল। এই বর্বরতায় আমি স্বামীকে হারিয়েছি, কিন্তু এটা কষ্টের চেয়ে বেশি গর্বের।’
দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় শহীদ মিনার ও বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, সন্ধ্যা ৬টায় কৌশিক সরকারের নির্দেশনােএবং সুমনা সরকারের গ্রন্থনা ও অভিনয়ে নাটক ‘জয়জয়িতা’ মঞ্চায়িত হবে।