
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় বহিরাগতদের দায়ী করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। তিনি বলেন, ‘শনিবার প্রথম শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলেও পরবর্তীতে বহিরাগতরা আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বহিরাগতরা সড়কপথ-রেলপথ অবরোধ করে এবং দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
আজ সোমবার দুপুরে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য এ সময় আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে গুলি করার অর্ডার দেয়নি। বরং শিক্ষার্থীদের যদি দমাতেই হয় তাহলে বুঝিয়ে বা হালকা কোনো কৌশল অবলম্বন করে।’
সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী আহত হয়েছে আমরা তাদের চিকিৎসার সব ব্যয় করব। যেসব ছাত্রের গায়ে পিলেট লেগেছে সেগুলো আমরা বের করার দায়িত্ব নিয়েছি। ছাত্রদের চিকিৎসার জন্য যে খরচ হয়, তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা হবে। কারও যদি উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে তবে আমরা তাকে ঢাকা পাঠাব।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা দেখছি বর্তমানে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানে সবাই আসবে কিন্তু কোনো বিশৃঙ্খলা করলে আমরা সেটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। আমাদের শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব, তারা যেন সার্বক্ষণিক পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করে।’
অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমরা আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেস মালিক সমিতি এবং স্থানীয় গণ্যমান্য যারা আছেন তাদের সাথে বসব। আমার ছাত্ররা আছে বলেই তাদের ব্যবসাগুলো চলছে। তাদের কাছে অনুরোধ করব, তারা যেন ছাত্রদের প্রতি সহমর্মী হয়। আমরা চাই, ছাত্র শিক্ষকদের সঙ্গে স্থানীয়দের একটি মেলবন্ধন গড়ে উঠুক।’
গত শনিবার স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। যাদের মধ্যে এখনো ৩০ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছে। এদিকে এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জন ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে দুদিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। আগামীকাল থেকে আবার সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলবে।