
বাস শ্রমিকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে পার্শ্ববর্তী বিনোদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
আজ শনিবার রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেটের আশপাশের কয়েকটি দোকানে আগুন দেয় এবং সংঘর্ষ চলছিল। সংঘর্ষে ৩৮ শিক্ষার্থীসহ অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম দাবি করেছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ২০০ এর বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজর রিপনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় আকাশের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট এসে আবারও কন্ট্রাকটরের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সাথে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদারদের ওপর চড়াও হন।
একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করেন। এ সময় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। এখন পর্যন্ত এ ঘটনা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি কিছু জানি না। হুট করে বিনোদপুর এসে দেখি মারামারি।
প্রত্যক্ষদর্শী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এক ছাত্রের সঙ্গে বাসের কন্ট্রাক্টরের প্রথমে ঝামেলা হয়। পরে ওই ছাত্রের ৮-১০ জন বন্ধু মিলে একজনকে মাটিতে ফেলে পেটাতে থাকেন। এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয় দোকান মালিকরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। এতে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে যায়।
বিনোদপুর বাজার সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা এক ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীদের থেকে উদ্ধার করতে গেলে উল্টো শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশের সামনেই তারা বিনোদপুরের কয়েকটি দোকানে আগুন দেয়। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।’
নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।’
মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।’