ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার সকালে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্র।
ভুক্তভোগী মাহাদী হাসান ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত তরুণ, ফাহিম ফয়সাল ও রাজু শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী মাহাদী হাসান বলেছেন, তিনি কয়েকদিন যাবৎ তার বরাদ্দ করা কক্ষে অবস্থান করছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিক, বাংলা বিভাগের তরুণ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফাহিম ফয়সাল এবং বাংলা বিভাগের রাজু তাকে হলের ৪২৭ নম্বর কক্ষে ডাকেন। তিনি তখন ইফতার শেষ করে নামাজে যাচ্ছিলেন। ফোন পেয়ে দ্রুত হলে আসেন। এসে দেখেন তার বই, বিছানাপত্র রুমের বাইরে পড়ে আছে। সেখানে আগে থেকেই তরুণ, ফাহিম, রাজুসহ আরও একজন উপস্থিত ছিলেন।মাহাদী বলেন, ‘‘আমি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করি। প্রথমে ফাহিম ভাই আমাকে বলেন- ‘তুই কোন কক্ষে থাকিস?’ আমি বলি, ৪২৮ আমার আবাসিক কক্ষ। আমি ওই কক্ষেই আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছি। তখন ফাহিম জানতে চান আগে কোথায় ছিলাম, উত্তরে ৩০৮ নম্বর কক্ষে একজনের অতিথি হয়ে থাকার কথা জানাই। বলি, এখন আমাকে ৪২৮ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমি এখানেই থাকব। তখন রাজু ভাই আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘ওইসব আবাসিকতার কাহিনি বাদ দে, আমরা যা বলব হলে তাই হবে।”
ভুক্তভোগী মাহাদী আরও বলেন, ‘এ সময় তরুণ ভাই বলেন- আমারে চিনিস, এখনো ভালোয় ভালোয় সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা।’এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরুণের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে অভিযুক্ত ফাহিম ফয়সাল বলেন, ‘আমরা তাকে হল থেকে বের করে দিইনি। বরং সে ৩০৮ নম্বর কক্ষে প্রায় দুই বছর ধরে অন্য একজনের আবাসিক সিটে থাকে। ওই আবাসিক সিটের ছেলেকে যখন ৪২৮ নম্বর কক্ষে দেওয়া হয় তখন সে ওই কক্ষের আবাসিকতা দাবি করে। তাকে বলা হয়েছে, তুমি তো ৩০৮-এ থাক, এখন এখানে কেন। তুমি ওখানেই থাক, বলে তার জিনিস নিয়ে যেতে বলি।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীকে সিট থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। কারণ সে ওই সিটে ওঠেইনি। আর আমরা কোনো আবাসিক ছাত্রকে হলে উঠতে বাধা দিইনি। আমরা সবসময় বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে সাহায্য করি।’
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। হল সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
আরেক অভিযুক্ত রাজু এ ব্যাপারে কিছু জানেন বলে দাবি করেন।