
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় ছয় দফা দাবিতে প্রশাসন ভবনে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় দুই দিনের বন্ধে ফাঁকা ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সকাল ১০টা ৩০ মিনিট) বিক্ষোভ চলছে। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই দিনের বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ছয় দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই আহত কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘হামলাকারীর আস্তানা গুঁড়িয়ে দাও’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় ও পুলিশ সদস্যদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহব্বত হোসেন মিলন বলেন, প্রশাসনের ভূমিকা খুবই লজ্জাজনক। আমরা চাই, স্থানীয়দের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আরও বেশি জোরদার করতে হবে।
এদিকে, আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠকে করবে বলে জানা গেছে। বৈঠকের বিষয়টি সকালে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা দেওয়া ছিল মূল কাজ। আমরা সেটাই চেষ্টা করেছি। সবার সঙ্গেই বসতে হবে। একদিনে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেছে। আমরা একটু পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় বসব। এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসব।
প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ বাধে। আট ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আগুন দেওয়া হয় বিনোদপুর বাজারের কয়েকটি দোকান ও পুলিশ বক্সে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ ও ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।