চার বছরেরও অধিক সময় ধরে কারাবন্দি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীকে ময়মনসিংহ কারাগারে পাঠিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে তাদের খুলনা জেলা কারাগার থেকে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দুই শিক্ষার্থী হলেন- হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ডিসিপ্লিনের ১৭ ব্যাচের নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের একই ব্যাচের মো. মোজাহিদুল ইসলাম। খুলনা জেল সুপার মো. নাসির উদ্দিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খানজাহান আলী থানা কৃষক লীগ কার্যালয় ও ৫ ডিসেম্বর আড়ংঘাটা থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া সোনাডাঙ্গা থানায় বিস্ফোরক আইন এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আরও দুটি মামলা করে তাদের বিরুদ্ধে। একই সময়ে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার একটি মামলায়ও তাদের আসামি করে।
সোনাডাঙ্গা থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপর মামলায় তাদের দুজনের ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া খুলনার খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এবং ময়মনসিংহ জেলায় তাদের বিরুদ্ধে আরও তিন মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানার মামলা দুটিতে তারা জামিন পেয়েছেন। তবে এখনই মুক্তি মিলছে না তাদের। অন্যান্য মামলা থেকে জামিন পেলেই তারা কারামুক্ত হবেন বলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী নিশ্চিত করেছেন।
গত ১ ডিসেম্বর খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানার দুই মামলায় খুলনার মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট বেগম আক্তার জাহান (রুকু)। মামলা পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেল।
কারাবন্দি মোজাহিদুল ইসলামের ভাই মোসাদ্দেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে তাদের ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ডিবি হেফাজতে রেখে নির্যাতন চালায়। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসানো হয়েছে, কারণ তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসিনা সরকারের সমালোচনা করতেন। আমরা এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাই এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তি চাই।
মন্তব্য করুন