গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ হারিয়েছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থী মুবতাছিন রহমান মাহিনসহ তিনজন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। প্রথম সারিতে থেকে আন্দোলন করেছিলেন তিনি।
জানা গেছে, মাহিন রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তিন সপ্তাহ আগেও বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের জুম্মাপাড়া এলাকায়।
মাহিনের বাবা ইমতিয়াজুর রহমান এবি ব্যাংকের সৈয়দপুর শাখার ব্যবস্থাপক। দুই ভাইয়ের মধ্যে মাহিন বড় ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার অ্যান্ড বিজনেস সোসাইটির শেষবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
মাহিনের বাল্যবন্ধু তাসিম জানান, আন্দোলনের সময় তিনমাস তারা একসাথে ছিলেন। বন্ধুরা একসাথে আন্দোলনে অংশ নেন। তাদের মধ্যে মাহিন সবসময় সামনে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। আন্দোলনের পর পরীক্ষার জন্য আবার ঢাকা ফিরে যান তিনি।
তিনি জানান, তিন সপ্তাহ আগে হঠাৎ বাড়িতে এসেছিলেন মাহিন। খুব তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরবেন বলেও জানান তিনি। তবে সারাজীবনের জন্য যে মাহিন ফিরে আসবেন এমনটি কল্পনাও করতে পারেননি বন্ধু তাসিম।
মাহিনের চাচা হাসান রহমান জানান, তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। এই শোক সহ্য করার সাধ্য নেই। এটি শতভাগ অবহেলা। রাস্তায় বিদ্যুতের তার ঝুলে পড়বে এটি কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি দোতলা বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যান।
এ সময় উদয়খালী বাজারে পৌঁছলে একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, লাইনটি ১১ হাজার ভেল্টেজের ছিল। একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে পিকনিকের বাসটি হেলে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মন্তব্য করুন