মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হোসেন্দী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটপেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা, অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত আরও ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানায় গজারিয়া থানার এসআই জাহিদ বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় দুপুর দেড়টার দিকে কেন্দ্র দখলে নিয়ে একাধিক ব্যালটপেপারে সিল মারেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যালটে মারার সিল লুট করে নিয়ে যান তারা। পরে ওই কেন্দ্রে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার। বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে আবার ভোটগ্রহণ শুরু করা হলে কেন্দ্রের বাইরে থাকা প্রায় ২০০ কর্মী সমর্থক জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের ওপর হামলা করেন। ভাঙচুর করা হয় তার ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি। হামলা ঠেকাতে গিয়ে ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন পুলিশের দুই সদস্য সাদ্দাম (২৪) ও সোহাগ (২৫)।
ঘটনা শুনে কেন্দ্রের ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাইরে বেরিয়ে এলে তাদের ওপর ইটপাটকেল, লাঠিসোঁটা, হাতবোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আবার কেন্দ্রের দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই কর্মী-সমর্থকরা। এসব ঘটনার উসকানি ও নেতৃত্ব দেন হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু।
পুলিশ বারবার তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ও বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন বলেন, আকস্মিক আমাদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। প্রতিরোধে আমাদের পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা।
গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খাঁন কালবেলাকে জানান, মামলার এজাহারে ১৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুম (২৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন