নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মানিক হোসেন নামের এক স্থানীয় সাংবাদিককে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হয়নি কেউ।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গুড়া থানার ওসি নাজমুল হক। এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে আহত সাংবাদিকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়- উপজেলার চকলক্ষীকোল এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. রাজিব (২৭), পুঁইবিল এলাকার মহসিন আলীর ছেলে মো. বায়োজিদ (২৫), মৃত হামিদ প্রামাণিকের ছেলে মো. মাহাতাব (২৭), কৈডাঙ্গা নতুনপাড়ার আবু তালেবের ছেলে আবুল বাশার (৪০), মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে মো. বাবুসহ (৩০) অজ্ঞাত আরও ২-৩ জন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে কিন্তু এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে মানিক হোসেনকে মারধরের ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক মানিক হোসেন দৈনিক খোলা কাগজের ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি এবং ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করে আসছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিকসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করেন। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাবসহ ১০-১২ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষু হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরির ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন হুমকি দিচ্ছিলেন। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে তারা। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্স-রে তে দেখা যায়- মানিকের পায়ের হাড় ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন