ইতালি নেওয়ার কথা বলে নির্যাতনের ঘটনায় মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার এক ছাত্রলীগ নেতা।
গ্রেপ্তার মো. শাকিল হোসাইন সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের বিভাগদী গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া মানবপাচার দলের প্রধান অভিযুক্ত মুকুল ঠাকুরের মেয়ে-জামাই তিনি। অন্যদিকে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন শাকিল।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে সালথা থানার মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সালথা থানার ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান।
সালথা থানার ওসি বলেন, মুক্তিপণের দাবিতে লিবিয়ায় শাকিল মিয়াকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ায় সারাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় শাকিল মিয়ার বাবা টিটুল মিয়া বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মানবপাচার দমন আইনে সাত জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
ওসি কালবেলাকে আরও বলেন, মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে অভিযান চালিয়ে এজারনামীয় আসামি শাকিল হোসাইনকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের নকুলহাটি বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আমাদের অনেক তথ্য দিয়েছে।
সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান বলেন, মো. শাকিল হোসাইন সালথা উপজেরা ছাত্রলীগের আট নম্বর সহসভাপতি। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ যে সিদ্ধান্ত দেবে তা আমরা মেনে নেব।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক। আমরা বিষয়টি তদন্ত করব। ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো নেতাকর্মীর অপরাধ করলে তার দায় সংগঠন নেবে না। তদন্ত করে সত্যতা পেলেই তাকে বহিষ্কার করা হবে।
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আছাদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, লিবিয়ায় শাকিল মিয়ার ওপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। অভিযোগের পরেই শাকিলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানানো হবে।
প্রসঙ্গত গত চার মাস আগে প্রতিবেশী মুকুল ঠাকুর নামে এক দালালের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালির উদ্দেশ্য রওয়ানা হন উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তুপুর গ্রামের দিনমুজুর মো. টিটুল মিয়ার একমাত্র ছেলে শাকিল মিয়া। তিনি ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। দালালেরা তাকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রেখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতন করছেন। এ নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
মন্তব্য করুন