ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ৯ দিন বন্ধ থাকার পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসগুলো। তবে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনার জেরে কলেজের সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
এদিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী ব্যাগ ও জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি কলেজে উত্তেজনার জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার মধ্যে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই দিন একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, নগরের রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিনটি বিভাগে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। এখানে ছাত্রাবাস আছে তিনটি। গত মঙ্গলবার রাতে অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক নোটিশে কলেজ চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই নোটিশে বলা হয়, প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ছাত্রাবাস খুলে দেওয়াসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে। তবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের অনতিবিলম্বে হল ত্যাগ, অন্যান্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের মুচলেকাসহ অঙ্গীকারনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।
কলেজ সূত্র আরও জানায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। ১৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় ১৮ ফেব্রুয়ারি একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় পুরো ঘটনা ও অভিযোগের বিষয় তদন্তে জেনারেল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। ২০ ফেব্রুয়ারি সেই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ ফেব্রুয়ারি কলেজের প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার এবং আরও ৫ শিক্ষার্থীর কাছে মুচলেকা চাওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান বলেন, আজ থেকে কলেজের পাঠ কার্যক্রম চালু হলেও শিক্ষার্থী– উপস্থিতি কম। ছাত্রাবাসগুলোও খুলে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রাবাসগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের ১১টি টিম কাজ করছে। অন্য বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র আরও খারাপ। তার তুলনায় আমরা ভালো আছি।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র ও স্টেকহোল্ডাররা যদি না বোঝে, তাহলে মুশকিল। আমরা সফটলি পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করার চেষ্টা করছি, অনেক ক্ষেত্রে পারছি না। অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলো যেন না ঘটে, তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন