ঝিনাইদহে আদালতের নির্দেশে লাশ দাফনের ৬১ দিন পর সোহান (১৪) নামে এক কিশোর স্কুলছাত্রের মরদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে সদর উপজেলার নগরবাথান গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেফতাহুল হাসানের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মরদেহটি উত্তোলন করে।
জানা যায়, সোহান নগরবাথান গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সোহানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পরে ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করা হয়। পরে সোহানকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে ঝিনাইদহ আদালতে তার বাবা শহিদুল ইসলাম ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আবেদন করলে জেলা সদর আমলি আদালতের বিচারক গত ৩ ডিসেম্বর তা মঞ্জুর করেন।
সোহানের মা সুন্দরী খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে নগরবাথান গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাকিব (২৭)। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
মামলার বাদী নিহত সোহানের পিতা শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাকিব ও তার অজ্ঞাত বন্ধুরা সোহানকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তার ঢাকার বাসা থেকে ডেকে ৩শ’ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহিদুল ইসলাম ছেলেকে বাড়িতে ফেরার জন্য ফোন করলে খুব ঝামেলায় আছে বলে জানায় সে। পরে সোহানের বাবা সাকিবকে ফোন করে। এ সময় সাকিব গালাগাল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। এর কিছুক্ষণ পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় সোহান হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে সাকিবের দুই ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা খাতুন সেখানে দেখতে পান।
সোহানের বাবা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকতেই সাকিবের পিতা আব্দুল আজিজ তাকে ফোন করে কোনো ঝামেলা না করার জন্য হুমকি দেন। এ ছাড়া সোহান দুর্ঘটনায় মারা গেছে এমনটা পুলিশকে বলার জন্য শিখিয়ে দেন সাকিবের ফুফা আরব আলী।
স্থানীয়রা জানান, আসামি সাকিবের ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা ঢাকায় মানুষের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির ব্যবসা করেন। এগুলো করে তারা ঢাকা ও ঝিনাইদহ শহরের একাধিক স্থানে বহুতল ভবন তৈরি ও জায়গা-জমি কিনেছেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ গোয়েন্দা বিভাগের এসআই শরীফ জানান, আদালতে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ফলে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা যাবে।
মন্তব্য করুন