সিলেটের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রঞ্চম শ্রেণির প্রশ্ন দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে তোলপাড় চলছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জেলার ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের সিলমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তবে এমন ভুল হতেই পারে বলে জানিয়েছেন ওসমানীনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল হক সানি।
জানা গেছে, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পরীক্ষায় পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্রে গ্রহণ করা হয়েছে। এতে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরীক্ষা শেষে অভিভাবকরা প্রশ্নপত্র দেখে শিক্ষকদের বিষয়টি জানালে এই বিষয়ে আর কারও সঙ্গে আলাপ না করার পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা।
এ ছাড়া এসব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য একাধিক ব্যক্তিদের দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে তদবির করান উম্মে সালমা। তবে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করায় শনিবার বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ে একটি সভার আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক।
জানা গেছে, গত ৩ ডিসেম্বর থেকে একযোগে উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়ে আগামী ১১ ডিসেম্বর শেষ হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অন্যান্য শ্রেণির পাশাপাশি পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সিলমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পরীক্ষায় পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্র দিয়ে নেওয়া হয় তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা। এতে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার আগেই পেয়ে যায় প্রশ্নপত্র।
একাধিক অভিভাবক জানান, এই বিদ্যালয়ে অবহেলার মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে। এত বড় একটি ভুল শিক্ষকদের কাছ থেকে আশা করা যায় না। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। পরীক্ষার পরে আমরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমাকে জানালে তিনি কারও সঙ্গে এ বিষয়ে কথা না বলার জন্য বলেন।
বিষয়টি স্বীকার করে সিলমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালমা বলেন, এটা ভুল হয়েছে। এই বিষয়ে স্থানীয়দের নিয়ে আলোচনা চলছে।
জানতে চাইলে ওসমানীনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল হক কালবেলাকে বলেন, এটা কীভাবে সম্ভব? পরক্ষণেই তিনি বলেন, এমন ভুল হতেই পারে। তবে এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন বলেন।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত এরশেদ কালবেলাকে বলেন, আমি এই বিষয়ে খবর পেয়েছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও যারা পরীক্ষার ডিউটি করেছে, তাদের শোকজ করেছি। তাদের তলব করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন