চলছে আমন ধানকাটার ভরা মৌসুম। কৃষক ব্যস্ত কাস্তের টানে মুঠি মুঠি ধানের গোছা কাটায়। এরই ফাঁকে কাঁধে কোদাল নিয়ে এ খেত ও খেতে ছুটে চলেছে শিশুর দল। ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ধানের শিষ সংগ্রহ করতে ওদের এ ছোটাছুটি।
ইঁদুরের গর্ত কিংবা ঝরে পড়া ধান দেখলেই তাদের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে সোনালি হাসি। ইঁদুরের নিয়ে যাওয়া ধান গর্ত খুঁড়ে বের করে আনে তারা। কুড়িয়ে নেয় মাঠে পড়ে থাকা ধানও। এসব ধানকুড়ানিদের অনেকেরই নেই নিজস্ব জমি-জিরেত। তাই তাদের পিঠা-পুলি তৈরির শখ-আহলাদ থাকে ইঁদুরের গর্তেই।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে বওলা ইউনিয়নের কোকাইল গ্রামে দেখা যায়, সকালের রোদ কিছুটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধানের ক্ষেতে ভিড় করে ছোট ছোট শিশুর দল। ধান কাটার পরে নাড়ার সঙ্গে দুই-এক গোছা ধান থাকলে সেগুলো কুড়িয়ে নেয় ওরা। এ ছাড়াও গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের বউ-ঝিরা ধান কুড়িয়ে নিচ্ছেন। আমন ধান কাটার মৌসুমে অনেক শিশু-কিশোর স্কুলে না গিয়ে দিন পার করছে ফসলের মাঠে ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে।
দেখা যায়, পরিত্যক্ত ক্ষেতে ধান কুড়াতে ব্যস্ত ছোট্ট শিশু মামুনের সারা গায়ে লেগে আছে কাদামাখা ছোপ ছোপ দাগ। একটু পাশেই দেখা যায় শিশু জনি, মিজান, হাসনা ও লিপি ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
এদের মধ্যে মিজান কালবেলাকে বলে, কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর এমনিতেই অনেক ধানের ছড়া ধানক্ষেতে পড়ে থাকে। ওগুলো আমরা কুড়িয়ে নেই এবং ইঁদুরের গর্ত খুঁড়লেই পাওয়া যায় প্রচুর ধান।
স্কুলপড়ুয়া জনি (১০) বলে, স্কুল থেকে এসে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে ও কুড়িয়ে ধান সংগ্রহ করি। এগুলো বিক্রি করে মা-বাবা সংসারের কাজে লাগান। কখনো কখনো পিঠা তৈরি করেও খাই।
মন্তব্য করুন