ময়মনসিংহের বিসিক শিল্পনগরীতে একটি কীটনাশক তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায় কারখানার গোডাউনে থাকা সব।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, নগরের মাসকান্দা এলাকায় বিসিক শিল্প নগরীর ভেতরে হেকেম বাংলাদেশ নামে একটি কীটনাশক কোম্পানির কারখানার গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত হয়। কীটনাশক তৈরির কাঁচামাল সংরক্ষণ করে অন্য একটি কারখানায় প্যাকেজিং করা হতো। কোম্পানিটিতে মুহূর্তেই আগুন লেগে তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আরও ছয়টি ইউনিট যুক্ত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট দুপুর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সকাল ১০টার দিকে কারখানার পাশেই বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া দেখতে পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে দেখি কীটনাশক তৈরির কারখানায় আগুন লেগেছে। আমরা তা নেভানোর পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। কিন্তু ততক্ষণে আগুনের প্রচণ্ড ভয়াবহতা দেখতে পাই। করাখানার ভেতরে থাকা ড্রামগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হচ্ছিল। পরে আগুন আশপাশে পুরোপুরি ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে আসে।
কারখানাটির ব্যবস্থাপক জামাল উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, কারখানাটির ভেতরে আমাদের কোনো লোক ছিল না। সপ্তাহে একদিন বা মাসে দুদিন কারখানা খুলে কাঁচামাল অন্য কারখানায় নেওয়া হতো। কীটনাশক তৈরির কাঁচামাল সংরক্ষণ করে পাশের কারখানায় প্যাকেজিং করা হতো। এসব কাঁচামাল ব্যয়বহুল, বিভিন্ন দেশ থেকে সংরক্ষণ করা হতো। গুদাম ভর্তি মালামাল ছিল। কীটনাশক তৈরির দাহ্য পদার্থে হঠাৎ আগুন লেগে মুহূর্তেই তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে কারখানাটি পুরোপুরিভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা হিসেব না করে বলা যাবে না।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান কালবেলাকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ১০টি ইউনিট কাজ করে তা নিয়ন্ত্রণে আনে। বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় পানির সংকটের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয়। তবে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় পানি এবং ফোমের সাহায্যে পুরোপুরি তা নিয়ন্ত্রণে আনেন আমাদের কর্মীরা। কীটনাশকের কারখানা হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যেহেতু কারখানাটি কেমিক্যালের, তাই নিজে নিজে উত্তপ্ত হয়ে আগুন লাগতে পারে। তবে সেটি তদন্তের পরই সঠিকভাবে বলা যাবে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
মন্তব্য করুন