নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

নেছারাবাদে খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ

নেছারাবাদে খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ। ছবি : কালবেলা
নেছারাবাদে খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ। ছবি : কালবেলা

পিরোজপুর নেছারাবাদের জলাবাড়ী ইউনিয়নে প্রায় সাত কিলোমিটার খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব খালের বেশিরভাগ স্থানে পাড় ড্রেসিং (ছেঁটে ফেলানো) করা হলেও উপরে কোনো মাটি ওঠানো হয়নি। আবার কিছু জায়গায় সামান্য মাটি খনন করেই কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যোগসাজশে চূড়ান্ত বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা চলছে।

সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই খাল খননের কাজ করানো হয়েছে।

জলাবাড়ী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি নামের একটি প্রতিষ্ঠান খননকাজ বাস্তবায়ন করছে। সঠিকভাবে খাল খনন করা না হলেও এরই মধ্যে মোট বরাদ্দ করা টাকার ৭১ শতাংশ পরিশোধ করা হয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গেলে স্থানীয়রা জানান, এলজিইডির টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে জলাবাড়ি ইউনিয়নের পাঁচটি খালের ৬ দশমিক ৯৫০ কিমি খনন করার ক্ষেত্রে সবকটি খালেই ফাঁকিবাজির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এভাবে খাল খনন মানুষের কোনো কাজে আসছে না। দায়সারাভাবে খনন করে চূড়ান্ত বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা করা হচ্ছে।

পূর্ব জলাবাড়ি গ্রামের কৃষক রিপন হালদার বলেন, মাদ্রা বাড়ানি খালের বেশিরভাগ জায়গার পাড় ড্রেসিং করেই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ওই কৃষকের অভিযোগ, সেচ সুবিধার জন্য খালের উজানের দিকে ভরাট হয়ে যাওয়া অংশে বেশি মাটি কাটার প্রয়োজন হলেও সেই অংশে পাড় ছাঁটাই করেই খনন করা দেখানো হয়েছে। পূর্ব জলাবাড়ী হাই স্কুলের পেছনের ৩০০ মিটারের বেশি খালে পাড় ছাঁটাই করে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এতে প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদের কোনো সুফল আসবে না। শুধু শুধু অর্থ অপচয় হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে খাল খননের কাজে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রি-ওয়ার্ক মাপে ফাঁকফোকর রেখে ডিজাইন ও প্রাক্কলন তৈরি করেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। বিভিন্ন সমিতির যোগসাজশে টাকা ভাগাভাগির বিনিময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে এসব প্রাক্কলন তৈরির সময় ডিজাইনে খালের উৎসমুখের গভীর খরস্রোতা (ছোট নৌযান চলাচলের মতো গভীর) অংশকে প্রকল্পভুক্ত করেন। সেই সুযোগে খালের সামান্য মাটি না তুলেই পাড় ড্রেসিং করে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বিল নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

জানতে চাইলে জলাবাড়ী পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সম্পাদক বিপ্লব হালদার অভিযোগ করেন, তাকে এড়িয়ে সভাপতি সুব্রত হালদার নানা ছলচাতুরী করে এককভাবে প্রকল্পের কাজ করেছেন।

সমিতির সভাপতি সুব্রত কুমার হালদার বলেন, ডিজাইনমতো সম্পূর্ণ কাজ করা হয়ে গেছে। সঠিকভাবে কাজ করলেও প্রকল্প প্রণয়ন থেকে শেষ পর্যন্ত বরাদ্দের ৩০-৩৫ শতাংশ টাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বিল তুলতে হয়।

খাল খননকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা পিরোজপুর এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল রানা বলেন, ডিজাইনমতো সঠিকভাবে খাল খনন করা হয়েছে। ডিজাইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। অনেক জায়গায় খালের পাড়ে মাটির অস্তিত্ব না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশপাশের লোকজন হয়তো নিয়ে গেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রাম্পকে নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন পুতিন

ফিলিস্তিন সংহতি দিবস উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি

চুয়াডাঙ্গায় অস্ত্রসহ যুবদল নেতা মিল্টন গ্রেপ্তার

হঠাৎ করেই বিয়েটা করা, পরিকল্পনা ছিল না : কেয়া 

জুমার দিনে শহীদ সাইফুলের জন্য দোয়া চাইলেন আসিফ নজরুল

কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজিতে স্বস্তি ফিরছে

ভূমিকম্পে কাঁপল জম্মু-কাশ্মির

শিশু নুহা-নাবা বাড়িতে ফেরায় আনন্দিত বাবা মাসহ স্থানীয়রা

বিস্ফোরণে কাঁপল এলাকা, আতঙ্কে টেকনাফবাসী

ঢাকায় আতিফ আসলাম, রাতে মাতাবেন মঞ্চ

১০

জায়গা দখলের অভিযোগে বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি

১১

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ

১২

সরকার সাহায্য না করলে সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব নয় : বদিউল আলম

১৩

কালবেলার দুঃখ প্রকাশ

১৪

শর্ত মানবে না বিসিবি, সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষের ইঙ্গিত

১৫

দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিন : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

১৬

রাঙামাটিতে বাস উল্টে আহত ২০

১৭

ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ / বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা পাচ্ছে

১৮

গুগল ম্যাপ দেখে গাড়ি নদীতে, বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক চরমে

১৯

আরও এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

২০
X