রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাতছড়ি উদ্যান দখল করে প্রভাবশালীদের লেবু চাষ

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের জায়গা দখল করে লেবু চাষ করা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা
হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের জায়গা দখল করে লেবু চাষ করা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের রিজার্ভ ফরেস্টের অভ্যন্তরে বিশাল জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা তৈরি করেছে লেবু বাগান। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বনের জীববৈচিত্র্য। এ ঘটনায় বনের খাদ্য সংকটে বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে চলে আসার ঘটনাও ঘটছে।

সূত্র জানায়, লেবু চাষ করে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বনের জায়গা দখল হয়ে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৫ প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪০০-৫০০ একর। এসব কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও কয়েকজন বন বিভাগের কর্মকর্তা ও সাতছড়ি উদ্যান কমিটির কতিপয় সুবিধাবাদী ব্যক্তি ম্যানেজ থাকায় ওসব বন ও বন্যপ্রাণী বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

সাতছড়ির রিজার্ভ ফরেস্ট দখল করে লেবু আবাদকারী স্থানীয় ১৫ জন হলেন- চিত্ত দেব বর্মা, বিজয় দেব বর্মা, সূর্য দেব বর্মা, আশীষ দেব বর্মা, হারিস দেব বর্মা, সুরেশ দেব বর্মা, রাসেল দেব বর্মা, অসিত দেব বর্মা, রঞ্জিত দেব বর্মা, প্রবীর দেব বর্মা, সমিরন দেব বর্মা, হিরন তন্তু, পরেশ দেব বর্মা, অমিত দেব বর্মা ও ফিরোজ দেব বর্মা। যারা সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের হর্তাকর্তা।

এদের মধ্যে পরেশ দেব বর্মা ও অমিত দেব বর্মার বিরুদ্ধে রিজার্ভ ফরেস্টে ফাঁদ পেতে মায়া হরিণ ও বন্য শূকরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকারেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বন বিভাগের একাধিক অভিযানে বন্যপ্রাণী শিকারের ফাঁদ উদ্ধার করলেও এদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

বন বিধ্বংসী লেবু চাষে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন স্থানীয় পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল। বিশ্বজিৎ পাল কালবেলাকে বলেন, যে ১৫ জন লেবু চাষ করছেন, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে দেওয়া হোক সরকারি অনুদান। কিন্তু বন ধ্বংস করা চলবে না। এসব কারণে বন্যপ্রাণীদের খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ নিয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ইনচার্জ মামুনুর রশিদ কালবেলাকে জানান, দীর্ঘদিন থেকেই এ লেবু চাষ করা হচ্ছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে অবগত রয়েছেন। অবশ্যই লেবু বাগান যেভাবে বৈচিত্র্যের জন্য হুমকি।

যোগাযোগ করা হলে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে জানান, একদিকে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানবিক দিক, অন্যদিকে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।

প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর ও ১৫০-২০০ প্রজাতির পাখি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৪ চেতনায় সবাইকে জাগ্রত হতে হবে : শামীম

পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া, ভাতিজাকে খুন করে গ্রেপ্তার চাচা

আর পি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে : মৎস্য উপদেষ্টা

আজিজুল হক কলেজে কনসার্ট চলাকালে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তাপসসহ ১৮ জনের নামে মামলা

কিছু মানুষের ব্রেইন সিটিস্ক্যান করে দেখার ইচ্ছা, কীভাবে এত ক্রিমিনাল হতে পারে?

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে তৃণমূলের আস্থা হুদাতে

১ হাজারে দৈনিক সুদ ১০০ টাকা!

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা

১০

‘ড্রেসিংয়ে গেলে বলতেন আন্দোলনে গেছিলা ক্যান’

১১

৩১ দফা বাস্তবায়নে বিএনপি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ : যুবদল সম্পাদক

১২

শহীদ শাকিলের কবরে ছাত্র ফেডারেশনের শ্রদ্ধা নিবেদন

১৩

দুই দিনের ব্যবধানে সোনার দাম বৃদ্ধি, ভরি কত?

১৪

সাগরে লুঘচাপের মধ্যেই বৃষ্টি নিয়ে বড় দুঃসংবাদ   

১৫

আ.লীগের ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ : রাশেদ প্রধান

১৬

সাতছড়ি উদ্যান দখল করে প্রভাবশালীদের লেবু চাষ

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমিটি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সংঘর্ষ

১৮

এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক

১৯

বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর ঠাঁই হবে না : আমিনুল হক 

২০
X