খোলা ট্রাকে করে শহর প্রদক্ষিণসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন তিন পাহাড়ি কন্যাকে। এ সংবর্ধনায় সিক্ত হলেন রূপনা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা ও মনিকা চাকমা।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রাঙামাটি মারি স্টেডিয়ামে রাঙামাটি রিজিয়ন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে এই তিন খেলোয়াড় যে বিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা ও ফুটবল খেলা শুরু করেন সেই ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ফুলে সজ্জিত খোলা ট্রাকে করে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে রাঙামাটির পথে যাত্রা শুরু করেন। সঙ্গে বিশাল গাড়ি বহর। পথের পাশে উৎসুক জনতার হাত নাড়িয়ে অভিনন্দন জ্ঞাপন। তাদের সাড়া দিয়ে হাত নাড়িয়ে অভিবাদন গ্রহণ করেন সাফ নারী জয়ী ফুটবল তারকারা। সঙ্গে ছিলেন ছোটবেলা থেকে যাদের হাত ধরে ফুটবলার হয়েছেন তারা।
সাফ সেরা ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়ি কাউখালি উপজেলায়, সেরা গোলরক্ষক রুপনা চাকমার বাড়ি নানিয়ারচরে। মনিকা চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ির লক্ষিছড়িতে হলেও লেখাপড়া ও খেলাধুলা করেছেন ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ে। আর এই তিন খেলোয়াড়েরই দাবি ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারীকরণের।
গাড়িবহর ঘাগড়া থেকে রাঙামাটির বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মারি স্টেডিয়ামে পৌঁছালে সেখানে সবার উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হন খেলোয়াড় ও কোচরা। পরে তাদের বিভিন্ন সরকারি, সামাজিক, ক্রীড়া ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি তিনজনের প্রত্যেককে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এ সময় তাদের কোচ ও সহযোগী ৭ জনকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ফিফা নারী রেফারি জয়া চাকমাকেও।
এদের অর্জন শুধু রাঙামাটি নয় দেশের অর্জন। তাই এমন অর্জনে গর্বিত রাঙামাটি আগামীতেও এ অর্জন ধারাবাহিকভাবে চলমান থাকবে- তেমনটাই প্রত্যাশা ক্রীড়া সংগঠকদের।
ঘাগড়া বিদ্যালয়কে সরকারীকরণের দাবি তিন খেলোয়াড়ের। তবে আগেরবারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া বাড়ি ও সড়ক না করায় কিছুটা আক্ষেপ জানালেন ঋতুপর্ণা। নিজ বাড়িতে সেতু নির্মাণের দাবি রুপনা চাকমার। অন্যদিকে মনিকা চাকমার দাবি তার বাড়িতে বিদ্যুৎ ও সড়ক নির্মাণের।
রাঙামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত ওসমান বলেন, ফুটবলাররা রাঙামাটির গর্ব, এজন্য আমাদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলে আরও খেলোয়াড় উঠে আসবে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান জানান, ফুটবলারদের সব সমস্যার সমাধানে প্রশাসন কাজ করবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে।
অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন