টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে কুড়িগ্রামের ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়েছে। ইতোমধ্যে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে নদনদীর পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে ধান ক্ষেত, বাদাম ক্ষেত ও মরিচ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীভাঙন ও ফসল নিয়ে আতঙ্কে আছে সেখানকার মানুষ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সন্ধ্যার মধ্যে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভবনা নেই।
জানা গেছে, পানি বৃদ্ধিতে তিস্তার তীরবর্তী রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ছয় ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি এবং গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে গেছে। এতে শুধু রাজারহাট উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৬০০ পরিবার। এ ছাড়া তিন শতাধিক হেক্টর জমির রোপা আমন ও মৌসুমি ফসলের ক্ষেতে পানির নিচে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম কৃষি অফিস।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশ্যাম গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘরের ভেতর তিস্তা নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। আমনসহ শাকসবজির ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত বন্যার পানি নেমে না গেলে শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হবে।
রাজারহাট উপজেলার রাজমাল্লি গ্রামের কৃষক মো. আব্দুস সাফি মিয়া বলেন, আমার তিন বিঘা জমিতে আধা পাকা ধান ক্ষেতে হঠাৎ তলিয়ে গেছে। কিছু ধান কাটতে পারলেও বাকি সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বন্যায় জেলার প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত পানি নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত বন্যার পানি না নামলে শাকসবজির ক্ষতি হবে। তবে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এখনো জানা যায় নাই।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, জিনজিনরামসহ সকল নদনদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন