অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে পার্লামেন্ট সরকার গঠন করতে হবে, সেই সরকার দেশ শাসন করবে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব দেশের প্রশাসনকে সংস্কার করে নির্বাচনের উপযোগী করতে হবে। সংস্কার আমরাও চাই। নির্বাচনে যৌক্তিক সময় আমরা দেব। যত দ্রুত নির্বাচন করা যাবে ততই দেশের জন্য কল্যাণকর হবে।
তিনি বলেন, কোনো রকম তালবাহানা আমরা সহ্য করব না। অবিলম্বে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দেশে ফেরানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। দলের সবার মামলা প্রত্যাহার করতে হবে- এটাই আমাদের দাবি। মামলা প্রত্যাহার করে গণতন্ত্রকে সংহত করার দাবি জানাই। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে কখনো একটি গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে না।
তিনি শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক পাটমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গেল ১৭ বছরে বিএনপির প্রায় এক হাজার লোককে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের অত্যাচারে বিএনপির নেতারা ঘুমাতে পারত না। এখনো আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। সামনে দুর্গাপূজা আসছে, এই দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই আপনারা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। বাংলাদেশের সব মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে এবং আপনাদের পূজা যেন হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে।
বিএনপি মহাসচিব গার্মেন্টস সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। তবে তার লোকজন এখনো পোশাক শিল্প অস্থিতিশীল করছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের আমলে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছিল।
তারা দুর্নীতির নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল। শেখ হাসিনা ধরে নিয়েছিল, তিনি সারা জীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করবেন এবং সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবেন।
হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের আয়োজনে জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, হুমায়ূন কবীর খান, মজিবুর রহমান, শওকত হোসেন সরকারসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে উপজেলার ঘাগটিয়ায় আ স ম হান্নান শাহর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারত করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মন্তব্য করুন