দুই মালিকের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ভারত থেকে আমদানি করা ১৯৭ টন কয়লা কুড়িগ্রামের চিলমারী নদীবন্দরে খালাস করতে না পেরে কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সংবাদ সম্মেলন করেছে। দ্বন্দ্বকে ঘিরে আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে হাত-পা ও চোখ বেঁধে পণ্যবাহী বাল্কহেড সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায়নি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় চিলমারী প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে আমদানি করা ১৯৭ টন কয়লা খালাসে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আরকে ড্রেজিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি মাসুদ কবির রানা।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ কবির রানা বলেন, ভারত থেকে চলতি বছরের ৫ জুন আমদানি করা ১৯৭ টন কয়লা একটি বাল্কহেড করে নিয়ে আসি। যার সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত ভ্যাট, ট্যাক্স, এআইটিসহ সরকারের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাল্কহেডটি চিলমারী ফকিরেরহাট ঘাটে এলে সরকারি যাবতীয় নিয়ম মেনে কয়লা আনলোড করতে শুরু করি। কয়লা আনলোড করতে গেলে বাল্কহেডের মূল মালিক মো. আনোয়ার হোসেন কয়লা আনলোড করতে বাধা দেন। বাল্কহেডের ভাড়াটে মালিক মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে মূল মালিক আনোয়ার হোসেনের লেনদেন থাকায় কয়লা আনলোড করতে বাধা দেয়। তারপর বাল্কহেডটি কয়লাসহ জোরপূর্বক কাঁচকোল ঘাটে নিয়ে যান তারা।
সম্মেলনে তিনি বলেন, এরপর পণ্য খালাসের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে বৈঠক করেও কোনো সুফল না পাওয়ায় চিলমারী মডেল থানা এবং জেলা প্রশাসকের নিকট ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগ করার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
মাসুদ কবির রানা আরও উল্লেখ করে বলেন, এই সময়টিতে বাল্কহেডে দায়িত্বরত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. নুর হোসেনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে এবং গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাকে (ম্যানেজার) হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে মোবাইল কেড়ে নিয়ে বাল্কহেডসহ নিয়ে যায় বাল্কহেডের মালিক ও তার লোকজন।
এরপর বাল্কহেডটি কড়াই বরিশালের আগে একটি চরে আটকে যায়। নৌ-পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞাত কারণে বাল্কহেডের ম্যানেজারকে ঘটনাস্থলে রেখে চলে আসে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ম্যানেজার নুর হোসেন জীবন বাঁচিয়ে অন্য নৌকাযোগে রমনা ঘাটে ফিরে আসে।
কয়লা আনলোডের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং কয়লা আনলোডসহ নিরাপদে গন্তব্যস্থানে পৌঁছাতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন মাসুদ কবির রানা।
মন্তব্য করুন