‘আমেরিকায় গিয়ে পিয়নের সঙ্গেও দেখা করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী’

সমাবেশ বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সমাবেশ বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।ছবি : কালবেলা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা জাপানে গিয়েছিলেন, যাওয়ার আগে অনেক কথা বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু জাপান থেকে কিছু আনতে পারেননি। তারপরে আমেরিকা গিয়েছিলেন। সেখানে সরকারি দপ্তরের একজন পিয়নের সঙ্গেও দেখা করতে পারেনি। এই প্রধানমন্ত্রীকে আমেরিকা সরকার থেকে কেউ ওয়েলকাম করতে আসেননি। আমেরিকা থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরী নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে আজ শুক্রবার খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ১০ দাবিতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে সমাবেশ উপলক্ষে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা, থানা, ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে সমবেত হন। সমাবেশ চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মহিলা দলের বর্তমান কমিটির সঙ্গে বহিষ্কৃত মহিলা দলের ৪ নেতার অনুসারীদের এই হতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সিনিয়র নেতারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যারা টাকা পাচারে জড়িত তাদের নাম সরকার মুখে আনছে না। কারণ তাদের লোকই এই টাকাগুলো পাচার করেছে। এভাবে সরকার দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ গরিব মানুষ দুবেলা খেতে পারে না, মধ্যবিত্ত মানুষ গরিব হয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষে এই অর্থনীতি ঠিক করা সম্ভব নয়।

‘এই সরকার যেখানে বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেখানে আর তারা বিচারবিভাগকে স্বাধীন করতে পারবে না। এই সরকার যেখানে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সেটা আর পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। তাই এ দেশের জনগণ এই অবৈধ ও স্বৈরাচারী সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুধু এই দেশের জনগণ নয়, সারা দেশের মানুষ আজ শেখ হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

সমাবেশ চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সমাবেশ চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।ছবি : কালবেলা

তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটনের রাস্তায় মানুষ স্লোগান দিয়েছে শেখ হাসিনা ভোট চোর। সেখানে গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হঠাৎ করে বসে একটি ছবি দিয়ে সারা দেশের মানুষকে বোকা বানাতে চেয়েছেন শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ সরকার স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কোনো বৈঠক হয়নি।’

সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে আবার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায়, যারা এই দেশের গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করেছে, সামাজিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সুশাসনকে ধ্বংস করে দিয়েছে- সেই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় মানুষ আর দেখতে চায় না।’

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, ‘আজকে জনগণ জেগে উঠেছে। জনগণের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। যদি ক্ষমতা না ছেড়ে নিজের হাতে রাখেন, তা হবে আওয়ামী লীগের জন্য অশনি সংকেত। এখন আওয়ামী লীগের কথা বললে জনগণ ছি ছি করে। আওয়ামী লীগ জনগণের দল নয়।

‘জনগণ অচিরেই গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেবে। সেদিন আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। পালানোর জন্য তাদের রাস্তা ফ্রি করে দিতে হবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com