‘নগরায়ণের ঢাকায় একসময় যে পরিমাণে জলাভূমি ছিল, তার বেশিরভাগই এখন ভরাট হয়ে গেছে। খাল আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এসব নিয়ে কেউ কাজ করে না। বর্ষার আগে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করলে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব।’
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সম্মেলন কক্ষে বাসযোগ্য ঢাকা মহানগরীর জন্য ড্রেনেজ ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন বিষয়ক অংশীজন কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাসযোগ্য ঢাকা মহানগরী নিশ্চিতকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক গৃহীত একটি ন্যায়সংগত অংশগ্রহণমূলক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পানি সম্পদ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আলী।
মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তফা আলী বলেন, ঢাকা শহরের খালগুলোর অব্যবস্থাপনা, সুনির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যা অতিমাত্রায় সমস্যা সৃষ্টি করছে। এর সমাধানে খালগুলো অনতিবিলম্বে পুনরুদ্ধার করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে জলাবদ্ধতা থাকলেও কেও তা নিয়ে কাজ করে না। হঠাৎ জলাবদ্ধতা বেড়ে গেলে তখন আমরা বিপদে পরে যাই। এর থেকে যদি আমরা আগে থেকেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করি, তাহলে বর্ষাকালে আর ভারি জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হবে না। এক্ষেত্রে রাজউকসহ অন্যান্য অংশীজনদের একযোগে কাজ করতে হবে।
রাজউক চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, এখন বুয়েটের মতো এলাকাতেও অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তা নিরসনে আমাদের দ্রুত সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। আমরা দখলকৃত জলাভূমি গুলো উদ্ধার করে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করব। পাশাপাশি আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। তিনি আরও বলেন, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে ড্রেন ভরাট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আমি আশাবাদী আমরা সকল অংশীজনরা মিলে একটি কার্যকর কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করতে পারব।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি, ঢাকা ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
মন্তব্য করুন