হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় প্রসূতির জরায়ুতে ভাঙা সুই রেখে সেলাই দেওয়ার দুই মাস পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা বের করা হয়েছে। ঘটনাটি চার মাস আগের হলেও শুক্রবার তা জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী শিপা আক্তার লাখাই উপজেলার জিরুন্ডা গ্রামের মনিরুল ইসলামের স্ত্রী।
মনিরুল জানান, গত ২৮ সেপ্টম্বর তার স্ত্রী শিপা আক্তারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে হাসপাতালের মিডওয়াইফ রুবিনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে নরমাল ডেলিভারিতে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শিপা। ডেলিভারির সময় শিপার জরায়ুর কিছু অংশ কাটতে হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকেই সেলাইয়ের জায়গায় ব্যথা অনুভব করে শিপা এবং এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে হাসপাতালে যোগাযোগ করলে তারা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
পরে ১৮ নভেম্বর একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে এক্স-রে করান। তখন দেখা যায় শিপার জরায়ুতে ভাঙা সুইয়ের একটি অংশ রয়ে গেছে। এর এক সপ্তাহ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভাঙা সুইয়ের অংশটি বের করা হয়। তবে শিপার শারীরিক অবস্থা এখনো ভালো নয় বলে জানিয়েছেন মনিরুল।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু তারপরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিডওয়াইফ রুবিনা আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী শামসুল আরেফীন বলেন, ‘আমি যোগদানের আগে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে বিষয়টি শুনেছি। রোগীর সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে, হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নরুল হক অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।