
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া ও ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের বেলকুচি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আজ শুক্রবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
এদিকে, দলীয় ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং হামলার ঘটনায় স্থানীয় এমপির ওপর ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, স্থানীয় এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মমিন মণ্ডল এবং সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে এই সংষর্ঘ হয়।
বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় এমপি ও দলীয় নেতাকর্মীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ সময় দলীয় কার্যালয়ে টানানো ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটির এক পর্যায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই নেতার কর্মীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। উভয় গ্রুপকেই দলীয় কার্যালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস বলেন, আমরা নেতাকর্মী নিয়ে সকাল পৌনে ৭টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হই। সকাল ৭টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি আবদুল মমিন মণ্ডল আসার পর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করি। আমরা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্য প্রদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণের পূর্বেই দলীয় কার্যালয়ে টানানো ব্যানারে এমপির নাম না থাকাকে কেন্দ্র করে এমপির লোকজন আমার ওপর চড়াও হয়। আমি বলি, এটা দলের ব্যানার, এখানে শুধু বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রীর ছবি আর নাম থাকবে। নিচে আয়োজনে উপজেলা আওয়ামী লীগ লেখা রয়েছে। কিন্তু তারা সেটা মানতে নারাজ। উত্তেজিত হয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করে।
তিনি আরও বলেন, তাদের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন, অলিভ মণ্ডল, রুবেল হোসেন গুরুতর আহত হলে আমি তাড়াতাড়ি তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। তবে এই ছোট্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে এমপির এমন আচরণ আমি আশা করিনি। আমি বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানাব।
এ বিষয়ে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, সকালে এমপি মহোদয় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কার্যলয়ের ভেতরে গিয়ে দেখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে তার নাম নেই। তখন বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে আশানুর বিশ্বাসের কিছু লোকজন কথাটি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে উভয়ের সমর্থকদের মাঝে সামান্য হাতাহাতি হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে আমরা দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে কলেজ মোড়ে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি এবং উপজেলা অডিটোরিয়ারে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, আজকের এই দিনে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।