গোপালগঞ্জের লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের ফলাফল ঘোষণায় অনিয়মের অভিযোগে করা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তি মারা গেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত ব্যক্তির নাম ইয়াছিন শেখ (৩০)। তিনি চরমানিকদাহের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক শেখের ছেলে। আব্দুর রাজ্জাক ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল বিকেলে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লতিফপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রিসাইডিং অফিসারকে ভোটকক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন নির্বাচনে সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী মো. সোহাগ হোসেন পলুর সমর্থরা। গতকাল বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ করেন ওই প্রার্থীর শতাধিক সমর্থক। এ সময়ে নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত গাড়িও আটকে রাখেন তারা। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বিক্ষুব্ধদের ওপর পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় চারজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পরে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ৪১ নম্বর চরমানিকদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে অবরুদ্ধ প্রিসাইডিং অফিসাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আহতদের মধ্যে সময় টিভির রিপোর্টার জয়ন্ত শিরালী ও ক্যামেরা পার্সন এইচ এম মানিকও রয়েছেন। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে রয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ, আনসার সদস্য, শাওন বিশ্বাস (২২), উৎপল চৌধুরী (২৩), লাকি আক্তার (২১), মো. হায়দার আলী, চরমানিকদাহের বাসিন্দা মফিজ মোল্লার ছেলে সম্রাট মোল্লা ও ইয়াছিন শেখ। তাদের তাৎক্ষণিক গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ইয়াছিনের অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য ঢামেকে ভর্তি করা হয়। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বিক্ষুব্ধরা জানিয়েছেন, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলাফল ঘোষণার আগে সদস্য প্রার্থী সোহাগ হোসেনের এজেন্টদের বের করে দেন প্রিসাইডিং অফিসার। এ সময় নেওয়া হয়নি এজেন্টদের কোনো স্বাক্ষর, প্রার্থীকে দেওয়া হয়নি রেজাল্টশিটও। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবু মোল্লার সঙ্গে আঁতাত করে প্রিসাইডিং অফিসার মো. সেলিম তালুকদার ফলাফল ঘোষণায় কারসাজি করে পরাজিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। কিন্তু গোপালগঞ্জ সদর থানার পুলিশ সদস্যরা বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, আমি নিজেই আহত হয়েছি, বক্তব্য দিতে পারব না।