
পঞ্চগড়ের আহমদনগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি এখনো থমথমে। ঘরহারা অনেক মানুষ ভয়ে এখনো তাদের ভিটায় ফেরেনি। এলাকায় পুলিশ-বিজিবি অবস্থান করলেও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি।
এদিকে, ঘটনার সাত দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেছেন, ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে এ অপতৎপরতা চালিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে, না হলে সারা দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ত।
পুলিশ সুপার বলেন, একটি পক্ষের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা পেট্রোল, গানপাউডার, ইটপাটকেল নিয়ে নাশকতার জন্য হামলা চালিয়েছে। পুলিশের ট্রাফিক অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। থানায় আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন কনস্টেবলকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। র্যাবের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের মধ্যে কে কোন দল করে, সেটা আমরা দেখছি না। ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করছি। খতমে নবুওয়াতের যে নেতারা সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছিলেন, পরে তারা চলে যান এবং পরিস্থিতি তাদেরও নিয়ন্ত্রণে ছিল না। বিভিন্ন ইসলামী দল ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে আগে থেকে আন্দোলন করছিল, তবে শুক্রবার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি আলাদা বিষয়।’
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ১৩টি মামলায় ১৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে সড়ক-মহাসড়ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। গত শুক্রবার আহমদনগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ পরিষদ সমর্থক মুসল্লিরা বিক্ষোভ করেন। তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালান বিক্ষুব্ধরা। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পঞ্চগড়। বাধ্য হয়ে রাত ৮টায় জলসা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপরও গুজব ছড়িয়ে ওই সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।