নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান অভিযোগ করেছেন তাকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহনের ভাই জুনায়েদ হক ভূইয়া জুনো এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ পরিকল্পনাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন।
আজ মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইটাখোলা চত্বরে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। দীর্ঘ ২৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে শিবপুরে আসেন তিনি।
হারুন বলেন, শিবপুরের সব অপকর্মের হোতা হলো আসাদ ও জুনো। সব পেশাদার খুনি, সন্ত্রাসীদের তারা লালন-পালন করেছে। তারা সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। ইয়াবা ব্যবসা, জমি দখলসহ সব অপরাধ তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আমার বিশ্বাস, আমাকে হত্যার পরিকল্পনাকারীর ভূমিকায় তারা রয়েছে। তাদের বিচার আইনিভাবে করতে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।
জুনো স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহনের ছোট ভাই এবং জেলা যুবলীগের সহসভাপতি। আসাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং এমপি মোহনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন বলেন, শিবপুর থানার পাশে আমার বাসা। সেখানে আমাকে গুলি করে হত্যা করার দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে তারা কার বলে বলিয়ান হয়ে এই কাজ করেছে, তারা কার সাথে চলাফেরা করেছে সবাই জানেন। তারা আমার উপজেলা নির্বাচন করেনি, মোহন সাহেবের এমপি নির্বাচন করেছে। তারা আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য না। তারপরও পুটিয়া ইউনিয়নে সর্বোচ্চ ক্ষমতার প্রদর্শন করেছেন তারা। কী কারণে কার মাধ্যমে করেছে, তা সবাই জানেন।
এমপি মোহনের উদ্দেশে হারুন বলেন, এই হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমার পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাকে হত্যার চেষ্টায় যারা জড়িত তাদের নিয়ে সংসদ সদস্য ঘুরাফেরা করেন।
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এমপি মোহনের ব্যক্তিগত কার্যালয় পুড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মৃধাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, মোহনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার নেপথ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিলেন হারুন। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেলেন গুলি। আর পেলেন উপজেলা নির্বাচনে বিরোধিতা।
তিনি বলেন, হারুনকে মারার জন্য যারা গুলি করেছে তাদের এমপি মোহনের ভাই জুনু দীর্ঘদিন ধরে লালন পালন করে আসছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, প্রতিহিংসা কেন থাকবে?
শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুহসীন নাজিরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূইয়া রাখিল।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হারুনুর রশিদ খানকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যানের ছেলে আমিনুর রশিদ খাঁন তাপস বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ জনকে।