মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় সংসদ সদস্যকে নিয়ে গান গাওয়ায় শিল্পীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার সাহারবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরে আহত সাইফুল ইসলাম সাহারবাটি গ্রামের আব্দুল কারিগরের ছেলে।
কণ্ঠশিল্পী সাইফুল জানান, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাহিদুজ্জামান খোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোখলেছুর রহমান মুকুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন হোসেন ধূমকেতু।
সাইফুল জানান, তিনি ‘খোকন ভাই, খোকন ভাই তোমাকে আবারও গাংনীবাসী এমপি হিসেবে দেখতে চায়’ গান শুরু করার পরই অনুষ্ঠান থেকে চলে যান আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল। গান শেষে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে আসার পরপরই এমপিকে নিয়ে গান করায় সাহারবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ মূর্শেদ অতুল ও অধ্যাপক আল আমিন হোসেন ধূমকেতু তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি ও থাপ্পড় মারতে থাকেন। অতুল গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুলের ঘনিষ্ঠ ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে সাইফুল বলেন, ‘ওরা এলাকার প্রভাবশালী তাই ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস হয়নি। আমি গরিব মানুষ, বিচার মহান আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা অতুল এবং মুকুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক আল আমিন হোসেন ধূমকেতু বলেন, “অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল ‘মোদের গরব মোদের আশা’ গান দিয়ে। কিন্তু সাইফুল স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে গান গাওয়ায় বিশেষ অতিথি কিছুটা ক্ষোভের বশে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করলে, আমি সাইফুলকে বিশেষ অতিথির কাছে ক্ষমা চেয়ে অনুষ্ঠানে ফিরিয়ে আনতে বলি। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে উত্তেজিত জনতা সাইফুলকে মারধর করে। আমি তাকে মারিনি বরং অন্যদের হাত থেকে বাঁচিয়েছি।’
সংসদ সদস্য মো. সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নাই। তাই কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’