সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বর্তমানে শীতকালীন প্রশিক্ষণে নিয়োজিত রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট একটি নিদের্শনা আমার প্রতি দেওয়া আছে। যখনই আমরা বাইরে থাকব, জনগণকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করব। আমরা যখন জনগণের কাছে আসি, সবসময় জনকল্যাণমূলক কিছু করার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘সবসময় আমাদের প্রচেষ্টা থাকে, যখনই আমরা জনগণের মধ্যে থাকি, তারা যেন অনুভব করে সেনাবাহিনী তাদেরই, সেনাবাহিনী যা-ই করবে তাদের ভালোর জন্যই করবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের উদ্যোগে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার চকচকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা অসুস্থ তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়াসহ ওষুধ বিতরণ করছি। এর বাইরেও আমরা গবাদি পশুর চিকিৎসা ও কৃষি সামগ্রী সহায়তাসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছি। শীতকালীন প্রশিক্ষণ শেষ হতে হতে আমরা লক্ষাধিক কম্বল বিতরণ শেষ করতে পারব।’
সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে, যুদ্ধক্ষেত্রে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাফল্য অর্জন করতে হলে অবশ্যই জনগণের সহায়তা দরকার। পৃথিবীর কোনো সেনাবাহিনী জনগণের সহায়তা ছাড়ায় জয়লাভ করতে পারেনি। বর্তমানের নগরায়ন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য ফাঁকা জায়গা পাওয়া মুশকিল। তাই জনগণের দোরগোরায় এসে প্রশিক্ষণ করায় জনসম্পৃক্ততা আরও বেড়ে গেছে। মানুষকে বুঝিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণগুলো করতে হবে।’
সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি দেশ গঠনমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করে সুখ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছে।
তিনি সৈনিকদের মনোবল উন্নত রেখে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে এক হাজার ৮০০ শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি দুস্থ ও অসহায় অসুস্থ নারী-পুরুষকে চিকিৎসাসেবাসহ বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করেন সেনাবাহিনী প্রধান।
এ ছাড়াও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ভেটেরিনারি সেবা ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির বিনামূল্যে টিকা এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি খামারিদের গবাদিপশু লালন-পালনসহ খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কারিগরি বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ সময় কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও এরিয়া কমান্ডার বগুড়া মেজর জেনারেল মো. খালেদ-আল-মামুন, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকি, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, ফুলবাড়ী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. জিন্নাহ আলম মামুন, ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।