দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস চলে সপ্তাহে দু’দিন। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সেবাপ্রত্যাশীদের।
জানা গেছে, জনবল সংকটে বিরামপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার পদ শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন মো. মনসুর আলী। তিনি বিরামপুর উপজেলায় সপ্তাহে দু’দিন জমি বেচাকেনার রেজিস্ট্রি করে থাকেন।
উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে সরকারিভাবে স্থায়ী পদ ৫টি। এগুলোর মধ্যে আগের সাব-রেজিস্ট্রার বদলি হলে পদটি শূন্য হয়। এ ছাড়া কার্যালয়ে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির পদও শূন্য রয়েছে।
এদিকে গ্রাহকদের দলিল প্রস্তুতির জন্য নকলনবিশ পদে এবং ‘নো ওয়ার্ক নো পেমেন্ট’ পদে ১৭ জন সহায়তাকারী কাজ করছেন। এ ছাড়া দিন চুক্তিতে একজন নৈশপ্রহরী ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন। সব মিলিয়ে এ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জনবল সংকট।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘন ঘন বৈদ্যুতিক লোডশেডিং হওয়ায় দলিল লিখতে বিলম্ব হচ্ছে। অপরদিকে সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে দু’দিন অফিস করায় জমি ক্রেতা-বিক্রেতার ভোগান্তি হচ্ছে।
উপজেলার হাবিবপুর দয়েরপাড় এলাকার নাসরিন আক্তার, গড়ের পাড়ের ফারজানা আক্তার, বিশ্বনাথপুরের মোয়াজ্জেম হোসেন, ধানজুঁজি এলাকার রায় মুন্ডু জানান, দলিল করতে এসে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিয়মিত কর্মকর্তা না থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে।
ছায়া দলিল নিতে আসা একজন জানান, স্থায়ীভাবে সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় জমি বেচাকেনায় গ্রাহকদের ভোগান্তি তো আছেই, সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় গ্রাহককে রেকর্ডরুম থেকে ছায়া কপি বা নকল দলিল উত্তোলন করতে অনেক দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। জনবল সংকট থাকার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাঙ্ক্ষিত জমির দলিল সম্পাদিত কাজে বিলম্বিত হচ্ছে।
সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অফিস সহায়ক বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তার পদটি শূন্য হওয়ায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা পার্বতীপুরের সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মো. মনসুর আলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে দুই কর্মদিবস বিরামপুরে জমি রেজিস্ট্রি সম্পাদন করেন।’
সাব-রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা মনসুর আলী দৈনিক কালবেলাকে বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরি করি, আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যেখানে আমাকে দায়িত্ব দেন, সেখানেই আমি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করি।’
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকার জানান, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়টি ইতোপূর্বে উপজেলা চত্বরে ছিল, যা ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মির্জাপুর মৌজার মির্জাপুর মোড়ে আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। সাব-রেজিস্ট্রার পদটি বদলিজনিত কারণে শূন্য হয়। কিছু জনবল সংকট রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রারসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবলের প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়েছে।