পৌরসভায় ঢুকে মেয়রকে গুলি করার হুমকি দিলেন আ.লীগ নেতা
যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ পৌরসভা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে তাকে এ হত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র। আজ শুক্রবার দুপুরে যশোর প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ অভিযোগ করেন।
মেয়র মোস্তফা বলেন, গত ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর কার্যালয়ে থাকার সময় মুছা মাহমুদ আমার কক্ষে ঢুকে সবাইকে বের করে দেন। অফিস কক্ষে ঢোকার মুখে সাত থেকে আটজন ক্যাডারকে বাইরে (কক্ষের সামনে) দাঁড় করিয়ে রাখেন। সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু মুছা মাহমুদ নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে আমার কথা-বার্তা বন্ধ রয়েছে। এদিন অফিসে ঢুকে সরকারি কাজে বাধা ও আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।
এ ঘটনার পর ঝিকরগাছা থানা পুলিশ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা আওয়ামী লীগকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করেছেন তিনি। এরপরও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কা থেকে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বলে জানিয়েছেন।
কী কারণে হত্যার হুমকি দিয়েছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, শহরের সাবেক বোটঘাট এলাকায় পাঁচ শতকের একটি সরকারি সম্পত্তি ডিসিআর না কেটেই মুছা মাহমুদের নেতৃত্বে দখল করে নেওয়া হয়েছে। এত দিন তালাবদ্ধ থাকলেও সেটা খোলা অবস্থায় দেখে আমি পৌর কার্যালয়ে এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে কেউ ডিসিআর কেটে নিয়েছে কিনা জানতে চেয়েছিলাম। এর ঘণ্টাখানেক পরে এসে মুছা মাহমুদ গুলি করে হত্যার হুমকি দেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়রের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মুছা মাহমুদ। তিনি বলেন, ওই জমি আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত অফিসের। যুবলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেনসহ কয়েকজন অফিস খুলে বসেছিলেন। পৌর মেয়র সেখানে গিয়ে তাদের গালিগালাজ করেন। সেখানে পৌর মেয়র ব্যক্তিগত অফিস বানাতে চান। এ বিষয়ে জানতে তিনি পৌরসভায় মেয়রের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়র পিস্তল বের করে গুলি করে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। এসব বিষয় উল্লেখ করে তিনি ঘটনার পরদিন ১৬ মার্চ ঝিকরগাছা থানায় জিডি করেছেন বলেও জানান।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত বলেন, ‘পৌর মেয়রের অভিযোগ পেয়েছি। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, মেয়র ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মুছা মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক। আমরা উভয়ের কাছ থেকে ঘটনা শুনেছি। সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।