কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সভায় বসেই চেয়ারম্যান বলেন, বাড়িতে ‘তেল দেওয়া লাঠি’ আছে

সভায় বসেই চেয়ারম্যান বলেন, বাড়িতে ‘তেল দেওয়া লাঠি’ আছে

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন দিয়েছেন ১১ জন সদস্য।

চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী সরকারের এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে ইউপি সদস্যরা। গত ২২ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদন করেন ওই ইউপি সদস্যরা।

আজ শুক্রবার বিকেলে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ইউএনও শোভন রাংসা। তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দলদলিয়া ইউনিয়নের নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণের জন্য ৩৩ জনের নাম চূড়ান্ত করে তালিকা তৈরির সময় চেয়ারম্যান জনপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার করে টাকা নেন। যারা আগে টাকা দেননি তাদের টাকা ওঠানোর দিন জোরপূর্বক টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যানের লোকজন। বিষয়টি যেন কাউকে না জানানো হয়, এজন্য হুমকিও দেওয়া হয়।

এ ছাড়াও ২০২১-২২ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় নন সোলার দ্বিতীয় পর্যায়ে দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সংস্কার প্রকল্পের কোনো কাজ না করেই ২ লাখ ১০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান।

এদিকে হতদরিদ্রের জন্য ইজিপিপি প্লাস প্রকল্পের আগের জব কার্ডধারী উপকারভোগী ৩৫৯ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৯ জনের নাম কর্তন করার নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারীভাবে ইউপি সদস্যদের সঙ্গে কথা না বলে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে প্রায় ৯০টি নাম কর্তন করেন। অতিরিক্ত কর্তন করা নামগুলো চেয়ারম্যানের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজের লোকজন। তাদের কাছে ৩ হাজার করে টাকা নিয়ে নামগুলো প্রতিস্থাপন করেন চেয়ারম্যান।

এদিকে মসজিদ ও মাদ্রাসার টয়লেট নির্মাণের টাকাও আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে।

এ ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেক্টর থেকে আয়ের টাকা সচিবকে নিয়ে যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। পরিষদের আয় নেই দেখিয়ে ইউপি সদস্যদের সম্মানীর ভাতাও আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এ রকম নানা অভিযোগের পাহাড় জমেছে চেয়ারম্যান লিয়াকতের বিরুদ্ধে।

দলদলিয়া ইউনিয়নের ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নুরুজ্জামান ও সইবর বলেন, চেয়ারম্যান যে কোনো সভায় বসে প্রথম বক্তব্যে বলেন, ‘বাড়িতে সরিষার তেল দেওয়া লাঠি আছে।’ এভাবেই আমাদের প্রায়ই হুমকি দেন।

তারা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান পরিষদে যত কাজ করেন তার সব মনগড়া। সদস্যদের কাউকে তিনি মানেন না।

নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ১১ ইউপি সদস্য কোনো উপায় না পেয়ে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা যা হবে আমরা মাথা পেতে মেনে নেব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, চেয়ারম্যান লিয়াকত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সুপারভাইজর ছিলেন। চাকরিকালে দুর্নীতির দায়ে প্রায় সাড়ে তিন বছর বরখাস্ত ছিলেন। সারা জীবন জাসদের রাজনীতি করে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে চেয়ারম্যান হন। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদও তার নেই।

এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী সরকার বলেন, ‘তারা অভিযোগ করতেই পারে। দেখা যাক কী হয়।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেট্রোরেল সাভার পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন

গরুর দুধে প্রাণঘাতী ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত এক ব্যক্তি

সমুদ্র সৈকতে ভয়ংকর বিষধর সাপ, আতঙ্ক

রাজধানীর যে ২০ স্থানে বসছে পশুর হাট

শ্রম পরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন আইন

‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্কলার্স কাপ ২০২৪’ / শুরু হলো জমজমাট বুদ্ধির লড়াই!

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে চাকরি, পদসংখ্যা ৫৪

‘সবসময় স্বপ্ন ছিল চেন্নাইয়ের হয়ে খেলার’

কুবিতে উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরের কার্যালয়ে তালা

ভিত্তিহীন মেইলে সমর্থন প্রত্যাহার / মামলায় জিতলেন লেবার পার্টির প্রার্থী নুরুল খান

১০

চবির হলে ছাত্রলীগ কর্মীর মদপান, ছবি ভাইরাল

১১

কুড়িগ্রামে হিটস্ট্রোকে এক নারীর মৃত্যু

১২

গাজীপুরে বিদ্যুতের সাবস্টেশনের ট্রান্সফরমারে আগুন

১৩

বেলুন উড়িয়ে শুরু হলো জব্বারের বলী খেলা

১৪

২৮ এপ্রিল খুলছে স্কুল-কলেজ

১৫

নারী শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে : জিল্লুর রহমান

১৬

জিআই সনদ পেল টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্য

১৭

মোনাজাতে অঝোরে চোখের পানি ফেললেন মুসল্লিরা

১৮

বাল্যবিয়ে রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে : মানবাধিকারের চেয়ারম্যান 

১৯

সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে ১৪ বিয়ে!

২০
*/ ?>
X